বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র এবং নিজ স্বার্থে যার সঙ্গে প্রয়োজন মনে করে, তার সঙ্গেই যোগাযোগ করবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না। সীমান্তের ওপারে যেই থাকুক, দেশের স্বার্থে বাংলাদেশ তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে।,
ড. খলিলুর রহমান জানান, নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের মাধ্যমে আরাকান আর্মিকে জোরালো বার্তা দেওয়া হয়েছে। বার্তায় বলা হয়েছে, আরাকানে যে নতুন প্রশাসন গঠিত হচ্ছে, তাতে রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্তি না ঘটলে তা হবে জাতিগত নিধনের একটি উদাহরণ, যা বাংলাদেশ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারে না।
তিনি বলেন, ‘এটি আরাকান আর্মির জন্য একটি পরীক্ষা। তারা কি জাতিগত নিধনের পক্ষে, না বিপক্ষে-সেটিই আমরা দেখতে চাই। উত্তর পাওয়ার পরই আমাদের পরবর্তী অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।’
আরাকান আর্মির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার নিজেই তাদের (আরাকান আর্মিকে) জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করলেও, আমরাও দেখতে পাচ্ছি সীমান্তে এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ। ফলে বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা, স্থিতিশীলতা এবং শান্তির স্বার্থে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।’
ড. খলিলুর রহমান আরও বলেন, ‘মিয়ানমার সরকারের সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, বাণিজ্যসহ নানা ইস্যুতে বোঝাপড়া বজায় রয়েছে। সব সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে সংলাপ জরুরি, না হলে সমাধান সম্ভব নয়।’
মানবিক করিডোরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সকল পক্ষ রাজি হলেই যে বাংলাদেশ সাহায্য পাঠাবে, বিষয়টি তেমন নয়। আরও অনেক বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে আরাকানে রোহিঙ্গাদের যেন কোনো বৈষম্য বা নিপীড়নের শিকার না হতে হয়, সে বিষয়ে বাংলাদেশ দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।’
রোহিঙ্গাদের জন্য ১ লাখ ১৩ হাজার ঘর বরাদ্দ প্রসঙ্গে ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘২০২৩-২৪ সালে সবচেয়ে বেশি রোহিঙ্গা এসেছে যুদ্ধাবস্থার কারণে। বন উজাড় করে আগতদের আশ্রয় দেওয়ায় পরিবেশে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভবিষ্যতে পরিবেশগত গবেষণা ছাড়াই কোনো সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ নেবে না।’
আপনার মতামত লিখুন :