যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসভিত্তিক মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ভেনাস অ্যারোস্পেস সম্প্রতি তাদের তৈরি হাইপারসনিক বিমান ‘স্টারগেজার’-এর সফল পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করেছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এই বিমানটি লন্ডন থেকে নিউইয়র্কের মতো দূরত্ব মাত্র এক ঘণ্টায় অতিক্রম করতে পারবে।
বিমানটি ঘণ্টায় প্রায় ৪,৬০০ মাইল (৭,৪০০ কিলোমিটার) বেগে চলতে সক্ষম। এই বিমানটি শব্দের গতির ছয় গুণেরও বেশি গতিসম্পন্ন। এটি ১,১০,০০০ ফুট উচ্চতায় উড্ডয়নে সক্ষম, যা প্রচলিত বাণিজ্যিক বিমানের তুলনায় অনেক বেশি।
এই অত্যাধুনিক গতি ও উচ্চতা অর্জনের জন্য বিমানটিতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব তৈরি ‘ভেনাস ডিটোনেশন র্যামজেট’ ইঞ্জিন, যা রকেট ও র্যামজেট প্রযুক্তির সংমিশ্রণে গঠিত এবং ২০০০ পাউন্ড থ্রাস্ট দিতে পারে।
এই ইঞ্জিনের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নাসা’র সহায়তায় একটি নতুন ধরনের নোজল ডিজাইন করা হয়েছে, যার ফলে বিমানটি মাচ ৫ (প্রায় ৩,৮০০ মাইল/ঘণ্টা) গতিতে চলতে পারে।
এই সাফল্যের মাধ্যমে ‘স্টারগেজার’কে পৃথিবীর প্রথম পুনঃব্যবহারযোগ্য হাইপারসনিক বিমান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ভেনাস অ্যারোস্পেসের পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিমানটি ২০৩০-এর দশকের শুরুতে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী পরিবহন শুরু করতে পারে।
বিমানটির পরিসীমা প্রায় ৫,০০০ মাইল, যা বিভিন্ন মহাদেশের শহরগুলোর মধ্যে অতি দ্রুত যাতায়াতের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে উচ্চগতির ড্রোন তৈরির পরিকল্পনাও করছে।
তবে শুধু ভেনাস অ্যারোস্পেসই নয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও হাইপারসনিক ও সুপারসনিক বিমানের উন্নয়নে কাজ করছে।
উদাহরণস্বরূপ, বুম টেকনোলজি তাদের ‘ওভারচার’ নামের সুপারসনিক বিমান নিয়ে গবেষণা করছে, যা লন্ডন থেকে নিউইয়র্কের দূরত্ব মাত্র ৩.৫ ঘণ্টায় অতিক্রম করতে পারবে।
প্রতিষ্ঠানটির পরীক্ষামূলক বিমান ‘এক্সবি-ওয়ান’ সম্প্রতি শব্দের গতিকে অতিক্রম করেছে।
‘স্টারগেজার’-এর পরীক্ষামূলক সফল উড্ডয়নকে বিমান চলাচলের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই প্রযুক্তি বাস্তবায়িত হলে বিশ্বব্যাপী যাতায়াতের সময় নাটকীয়ভাবে কমে আসবে, যা ব্যবসা, পর্যটন এবং বৈশ্বিক সংযোগের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা করবে।
তথ্য সূত্র- মেট্রো ইউকে
আপনার মতামত লিখুন :