ঢাকা বুধবার, ২১ মে, ২০২৫

ড. ইউনূসকে অস্ট্রেলিয়ার ৪৩ সিনেটর-এমপির চিঠি

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৫, ০১:৪৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা, জুলাই অভ্যুত্থানের ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার করা এবং র‌্যাব ভেঙে ফেলার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জরুরিভিত্তিতে চিঠি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া পার্লামেন্টের ৪৩ সিনেটর ও এমপি।

বুধবার (২১ মে) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তিনটি ইস্যুকে সামনে রেখে এই চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে- আমরা, নিম্নস্বাক্ষরকারী অস্ট্রেলিয়ান সিনেটর এবং সংসদ সদস্যরা, ‘নির্বাচিত সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণকে সমর্থন করার জন্য আমাদের প্রত্যাশা ভাগাভাগি করতে চাই। সে জন্য অবিলম্বে নির্দিষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ প্রদান, জুলাই অভ্যুত্থানের ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার প্রদান এবং র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ন্যায়বিচারকে সমর্থন করার জন্য আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে বাংলাদেশের জনগণের দেখানো সাহসিকতা এবং সাহসকে স্বীকৃতি জানাই। এটি আপনার প্রশাসনকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানবাধিকার সমুন্নত রাখার এবং শাসনব্যবস্থার ওপর জনসাধারণের আস্থা পুনর্নির্মাণের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ দিয়েছে।’

অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের সিনেটর ও এমপিরা নির্বাচনি অখণ্ডতা পুনরুদ্ধার এবং শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করে বলেন, ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অবাধ, সুষ্ঠু এবং আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের জন্য একটি স্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। অস্ট্রেলিয়ান বাংলাদেশ সম্প্রদায় আমাদের জানিয়েছে যে, তারা আশা করে, এই ক্যালেন্ডার বছরে এটি ঘটবে এবং সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। নির্বাহী ব্যবস্থার ব্যবহার এবং অযাচিত প্রভাব বা দমন রোধ করতে হবে।’

তারা আরও বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে অনেক মানুষের মতো আমরাও বাংলাদেশের ছাত্র এবং সাধারণ নাগরিকদের সাহসিকতা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছি যারা জুলাই বিপ্লব ঘটাতে পেরেছিলেন। তবে, এই বিজয় এসেছে বিশাল মানবিক মূল্যে। তাই যারা ভুক্তভোগী তাদের পরিবারের জন্য সত্য, ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণের জন্য অনুরোধ করছি।’

চিঠিতে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) অবিলম্বে ভেঙে ফেলা প্রসঙ্গে বলা হয়, মানবাধিকার পর্যালোচনায় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম এবং নির্যাতনসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতে, ২০০৯ সাল থেকে র‍্যাব কর্তৃক ২,৬৯৯ জনেরও বেশি মানুষকে বেআইনিভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং বাহিনীটি সম্পূর্ণ দায়মুক্তির সাথে কাজ করেছে, মতবিরোধকে চুপ করিয়েছে এবং রাজনৈতিক বিরোধীদের লক্ষ্য করে কাজ করেছে।

আমরা র‍্যাবের নেতৃত্বের ওপর মার্কিন সরকার কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলোকে সমর্থন করে উল্লেখ করেছি এবং আমরা অস্ট্রেলিয়ান সরকারকে অনুরূপ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। আবারও আমরা লক্ষ্য করছি অস্ট্রেলীয় বাংলাদেশ সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আপনার প্রশাসনের কাছে র‍্যাব ভেঙে ফেলার এবং এর শিকারদের ন্যায়বিচার প্রদানের অনুরোধ।

দ্রুত নির্বাচনসহ ৩ দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অস্ট্রেলিয়ার ৪৩ সিনেটর-এমপির চিঠি