পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন দায়িত্ব ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাঁর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম। তিনি হবেন বাংলাদেশের ২৮তম পররাষ্ট্রসচিব।
বুধবার (২১ মে) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁদের মতে, আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই আসাদ আলমকে ঢাকায় ফেরানো হবে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেবেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়াশিংটন থেকে আসাদ আলম সিয়াম বলেন, ‘জুনের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকায় ফেরার জন্য আমাকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। তবে এখনো কোনো দাপ্তরিক আদেশ হাতে পাইনি।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন আগামী দুই-এক দিনের মধ্যেই দায়িত্ব ছাড়বেন। তবে ছুটির পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, ‘জসীম উদ্দিন নিজেই দায়িত্ব ছাড়তে চেয়েছেন, কোনো অপসারণের বিষয় নেই। সরকারও তাঁর সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েছে।’
নতুন সচিব দায়িত্ব নেওয়ার আগ পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন রুহুল আলম সিদ্দিকী, যিনি আগামী ২০ জুন অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটিতে যাচ্ছেন।
প্রথমে এই দায়িত্ব দেওয়ার জন্য সচিব (পূর্ব) মো. নজরুল ইসলামের নাম বিবেচনায় থাকলেও তিনি ছুটির আবেদন করায় সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়।
বিসিএস (পররাষ্ট্র ক্যাডার) ১৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা আসাদ আলম সিয়াম ইতিপূর্বে ফিলিপাইন ও অস্ট্রিয়ায় রাষ্ট্রদূত ছিলেন এবং রাষ্ট্রাচারপ্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে বর্তমানে তিনি অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদায় রয়েছেন। ফলে পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে তাঁকে সচিব পদে পদোন্নতির আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
এদিকে পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত আলোচনায় আরেকটি নাম ঘুরেফিরে আসছে, তা হলো সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সুফিউর রহমান। তাঁকে গত ২০ এপ্রিল প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও এখনো তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেননি।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘সরকার সিদ্ধান্ত নিলে উনি যোগ দেবেন, না হলে দেবেন না। এটা নিয়ে এখনও কিছু চিন্তাভাবনা চলছে।’