ঢাকা সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৫

বাংলাদেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয় করতে চায় পাকিস্তান

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২৫, ০৭:১১ পিএম
আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশনে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ছবি- সংগৃহীত

দীর্ঘ ২০ বছর পর বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০০ নতুন বৃত্তি প্রদানের পাশাপাশি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান।

আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ইআরডি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের আজকের ৯ম সভায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং পাকিস্তানের পক্ষে দেশটির ফেডারেল অর্থনৈতিকবিষয়ক মন্ত্রী আহাদ খান চিমা প্রতিনিধিত্ব করেন। অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে এ সভায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন ১৬ জন।

বৈঠকে প্রধান আলোচনার বিষয় ছিল দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি।

প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠকে কৃষি গবেষণা, হালাল ফুড, তথ্যপ্রযুক্তি ও নৌ-পরিবহনসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়াও বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাকিস্তানি বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চাওয়া হয়।

তবে এ বৈঠকে বিশেষভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশকে করাচি বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি।

তা ছাড়া সিকিউরিটি প্রিন্টিং ও ব্যাংকিং খাতে সব ধরনের ব্যাংক নোট, প্রাইজবন্ড ও অন্যান্য নিরাপত্তা সামগ্রী মুদ্রণে ব্যবহৃত নিরাপত্তা কালিতে শতভাগ আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রে অংশ নিতে চায় দেশটি। ব্যাংক খাতে কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং দুই দেশের ডিজিটাল নাগরিক আইডেন্টিটি ও পাসপোর্ট ডিজিটালাইজেশনে সহযোগিতা ছাড়াও অন্যান্য বিষয়েও আলোচনা হয়।

যৌথ উদ্যোগে ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত গবেষণা, পরিবার পরিকল্পনা ও প্রজনন স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও আলোচনা করা হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) ও মেরিটাইম খাতেও যৌথ কার্যক্রমের সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং পাকিস্তান ন্যাশনাল শিপিং করপোরেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তন এসেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের কয়েক দফা বৈঠক এবং উভয় দেশের মধ্যে সফরও হয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটির বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফর করেছেন।

২০০৫ সালের পর এমন সভা আর হয়নি দাবি করে সভা শেষে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, প্রায় দুই যুগ আজ বাংলাদেশ-পাকিস্তান নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের একটি সভা হয়েছে। এটা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা

তিনি বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মিটিং করেছি। পাকিস্তানের মন্ত্রী এসেছেন সঙ্গে তাদের টেলিভিশন নিয়ে। দুই দেশের মধ্যে মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কৃষি, বাণিজ্য, কমার্স ও আইটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এগ্রিকালচার, ফুড—প্রত্যেকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।’

পাকিস্তানের জ্বালানিমন্ত্রী জানান, ‘বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে এই আলোচনার কারণে দুই দেশের জনগণের সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে, এর ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। বাংলাদেশ থেকে পাট ও ওষুধ নেওয়ার বিষয়ও আলোচনা করেছি আমরা।’