ঢাকা মঙ্গলবার, ০৩ জুন, ২০২৫

জাপান থেকে কি কি আনলেন প্রধান উপদেষ্টা?

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১, ২০২৫, ১০:০৬ এএম
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার। ছবি- সংগৃহীত

চার দিনের সরকারি সফর শেষে জাপান থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শনিবার (৩১ মে) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে জানান, রাতে দেশে ফিরেছেন তিনি।

শফিকুল আলম জানান, সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা টোকিওতে প্রায় ২০টি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন, যার মধ্যে একটি ছিল জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সঙ্গে বৈঠক।

সফরের তৃতীয় দিনে শুক্রবার (৩০ মে) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

বৈঠকে দুই নেতা চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যেকার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন, যার মাধ্যমে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে। জাপানি প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা ও রেলপথ উন্নয়নের জন্য ১.০৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণের প্রতিশ্রুতি দেন।

একই দিনে অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু পরিবর্তনের সহনশীলতা শক্তিশালীকরণে ডেভেলপমেন্ট পলিসি ঋণ (৪১৮ মিলিয়ন ডলার), জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়েল-গেজ ডাবল লেন রেলপথ প্রকল্পের জন্য ঋণ (৬৪১ মিলিয়ন ডলার) এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন বৃত্তির জন্য অনুদানসহ (৪.২ মিলিয়ন ডলার) তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। 

এদিকে প্রধান উপদেষ্টা ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনারে’ দেওয়া বক্তব্যে বলেন, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতার ক্ষেত্রে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বাংলাদেশ ও জাপান দুটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জাপানে তাদের কর্মসংস্থান সহজতর করা, কারণ জাপানে শ্রমিক সংকট বিদ্যমান। এ চুক্তিগুলো টোকিওর হিরাকাওচো চিয়োদা সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত মানবসম্পদ সেমিনারে স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
 
অনুষ্ঠানে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত ১ লাখ কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান, যা দেশটির ক্রমবর্ধমান শ্রম সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে।
 
একই দিন ৩০তম নিক্কেই ফোরাম: ‘ফিউচার অব এশিয়াতে’ মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা।
 
নিক্কেই ফোরামের পাশাপাশি, অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্যপদ পেতে সমর্থনের আহ্বান জানান।

এদিকে শুক্রবার (৩০ মে) সোকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ইউনূসকে সামাজিক উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে।

শনিবার (৩১ মে) প্রধান উপদেষ্টাকে বহনকারী সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি জাপানের স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ২০ মিনিটে সিঙ্গাপুর হয়ে ঢাকার উদ্দেশে টোকিওর নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

একই দিন রাত ১২টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ফ্লাইটটি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।