রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় আরও মৃত দুই শিশুর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. তানভীর আহমেদ এবং তৃতীয় শ্রেণির জুনায়েদ। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে, যার ফলে ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। ঢামেকের মর্গে বর্তমানে মরদেহ দুটি রয়েছে।
বিমান বিধ্বস্তের পর আহত অন্তত ৫০ জন নারী, শিশু ও শিক্ষার্থীকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসাধীনদের মধ্যে ৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান জানান, ‘উত্তরায় একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধ অন্তত ৩০ জন আমাদের জরুরি বিভাগে এসেছে, যাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। সবার অবস্থাই গুরুতর।’
ঢামেক বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. বিধান সরকার জানান, ‘আমাদের এখানে নারী-শিশুসহ চারজন এসেছে। নিহতদের একজন জুনায়েদ হাসান, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।’
এ পর্যন্ত শনাক্ত দগ্ধদের মধ্যে রয়েছেন: শামীম ইউসুফ (১৪), মাহিন (১৫), আবিদ (১৭), রফি বড়ুয়া (২১), সায়েম (১২), সায়েম ইউসুফ (১৪), মুনতাহা (১১), নাফি (১০), মেহেরিন (১২), আয়মান (১০), জায়েনা (১৩), ইমন (১৭), রোহান (১৪), আবিদ (৯), আশরাফ (৩৭), ইউশা (১১), পায়েল (১২), আলবেরা (১০), তাসমিয়া (১৫), মাহিয়া (১৩), অয়ন (১৪), ফয়াজ (১৪), মাসুমা (৩৮), মাহাতা (১৪), শামীম (১৭), জাকির (৫৫), নিলয় (১৪), সামিয়া (১৪), আরিয়ান (১২), তৌফিক (১৩), নূসরাত (১৩), ইদ্রিস (১৫), জায়মা (১৩), সাইবা (৯), রাইসা (১১), নিশি (২৮), মাসুকা (৩০), বাপ্পি (১০) এবং মাসুম (৫০)।
নিবিড় পরিচর্যায় থাকা সাতজন হলেন: নাফিস, শামীম, শায়ান ইউসুফ, মাহিয়া, আফনান, ফাইয়াজ এবং সামিয়া। এদের মধ্যে কয়েকজনের দেহের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা।
ঢামেকে ভর্তি রয়েছেন রাইয়ান (১৪), জারিফ (১২), সবুজা বেগম (৪০) এবং মৃত জুনায়েদ (১১)।
দুপুর আড়াইটার পর থেকে এখন পর্যন্ত আহতদের ঢামেক ও জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে আনা হচ্ছে। ভবনটির নাম ‘হায়দার হল’ বলে জানা গেছে।
এই দুর্ঘটনার পর ভবনটি থেকে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করে ফায়ার সার্ভিস। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত বিমান বিধ্বস্তের কারণ জানানো হয়নি।