রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম

পানিতে ডুবে প্রতিদিন প্রাণ হারায় ৫১ জন, ৭৫ শতাংশ শিশু

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২৫, ০৪:২৩ পিএম

প্রতীকি ছবি

প্রতীকি ছবি

বাড়ির পাশের ডোবা, পুকুর কিংবা নালা-নর্দমার অরক্ষিত জলে প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে শিশু। আমাদের অসচেতনতা আর নিরাপত্তাহীনতায় বাড়ছে এই নীরব মৃত্যুর মিছিল।

আজ শুক্রবার (২৫ জুলাই) পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ দিবস’। এদিন বাংলাদেশের শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর বাস্তবতা সামনে এনেছে সদ্য সমাপ্ত একটি জাতীয় জরিপ।

২০২৪ সালে শেষ হওয়া ‘ন্যাশনাল হেলথ অ্যান্ড ইনজুরি সার্ভে বাংলাদেশ’-এর তথ্যমতে, দেশে প্রতিদিন গড়ে পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে ৫১ জন। এর মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই শিশু-অর্থাৎ গড়ে দিনে ৩৯ জনের বেশি। এই মৃত্যু কেবল পরিসংখ্যান নয়; প্রতিটি ঘটনা একেকটি পরিবারের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত হয়ে থাকে।

এই জরিপটি পরিচালনা করেছে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি)।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তায় এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সহযোগিতায় দেশের ১ লাখ ১১ হাজার পরিবারের তথ্য বিশ্লেষণ করে জরিপটি পরিচালিত হয়। এটি ২০২৩ সালের মে মাসে শুরু হয় ও ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়।

গবেষণার প্রধান সেলিম মাহমুদ চৌধুরী জানান, ‘পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ১ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুরা। এ বয়সে তাদের চলাফেরা বেশি, কিন্তু সচেতনতা বা তদারকি কম থাকায় অল্প সময়েই ঘটে যায় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।’

জরিপ অনুযায়ী, প্রতিবছর পানিতে ডুবে মারা যায় প্রায় ১৮,৬৬৫ জন। এর মধ্যে ১৪,২৬৯ জনই শিশু। এসব মৃত্যুর ৭০ শতাংশই ঘটে বাড়ির আশপাশে থাকা খোলা ও অসুরক্ষিত জলাশয়ে- যেমন- পুকুর, ডোবা, নালায়। অনেকে এসব স্থানকে বিপজ্জনক বলে ভাবেও না, যার ফল ভয়াবহ।

জরিপে আরও দেখা গেছে, দেশের প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে বছরে গড়ে ৬০ জন মারা যান আঘাতজনিত কারণে। এর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ শতাংশ, আত্মহত্যায় ১২.৪২ শতাংশ এবং পানিতে ডুবে মৃত্যু ১১ শতাংশ। অর্থাৎ, পানিতে ডোবা এখন দেশের আঘাতজনিত মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ।

এই ভয়াবহ চিত্রের মাঝেও আশার আলো দেখাচ্ছে কিছু কার্যক্রম। নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ শিশু একাডেমি বর্তমানে ১৬ জেলার ৪৫টি উপজেলায় একটি প্রকল্প চালাচ্ছে। এ প্রকল্পে ১–৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র এবং ৬–১০ বছর বয়সীদের জন্য সাঁতার শেখানো হচ্ছে।

এই প্রকল্পের কর্মসূচি ব্যবস্থাপক তারিকুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘যেসব এলাকায় এই কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে, সেখানে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তবে প্রকল্পটি এখনো সীমিত পর্যায়ে রয়েছে।’

দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহার নঈম ওয়ারা মনে করেন, ‘শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুরোধে বর্তমানে যেসব কাজ হচ্ছে, তা যথেষ্ট নয়।’

তার মতে, সরকারি দিবাযত্ন কেন্দ্রের পাশাপাশি সমাজভিত্তিক ও স্থানীয় পর্যায়ের উদ্যোগ বেশি কার্যকর হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মৃত্যুগুলো প্রতিরোধযোগ্য। প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, ব্যাপক সচেতনতা এবং স্থানীয় মানুষদের সক্রিয় অংশগ্রহণ। কারণ প্রতিটি শিশুর প্রাণ অমূল্য- আর একটি অসতর্ক মুহূর্ত যেন কোনো পরিবারকে চিরতরে শোকস্মৃতিতে না ডোবায়।

Shera Lather
Link copied!