ঢাকা শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫

আমি মাকে আগুনে পুড়তে দেখেছি: জাইরার হৃদয়বিদারক বর্ণনা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ১১:১২ এএম
লামিয়া আক্তার সোনিয়া। ছবি- সংগৃহীত

ঢাকার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুলে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন লামিয়া আক্তার সোনিয়া। সেই দুর্ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যায় তার তৃতীয় শ্রেণির স্কুলপড়ুয়া মেয়ে আসমাউল হোসনা জাইরা। তবে বেঁচে গেলেও, তার স্মৃতিতে গেঁথে গেছে এক ভয়ংকর বাস্তবতা মায়ের আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার দৃশ্য।

দুর্ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন জাইরার মা লামিয়া। তার মরদেহ শনাক্ত করতে সময় লেগে যায় তিন দিন। সিআইডি গত ২৪ জুলাই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশ শনাক্ত করে এবং স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে।

তবে, জাইরা সেই সময়েই গণমাধ্যমকে জানিয়ে দিয়েছিল, আমার মাকে খুঁজে লাভ নেই। আমি দেখেছি, আমার মা আগুনে পুড়ে গেছে।

জাইরার বাবা আমিরুল ইসলাম জনি জানান, ২১ জুলাই সকালে সোনিয়া স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যান। স্কুলে ঢোকার পর সোনিয়া মেয়েকে একটি ক্লাসশিট সংশোধনের জন্য এক শিক্ষকের কাছে পাঠান। ওই মুহূর্তেই ঘটে দুর্ঘটনাটি। জাইরার চোখের সামনেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় মায়ের।

বাবা জনি বলেন, দুই দিন ধরে মেয়ের মন খারাপ। আমরা যখন জিজ্ঞেস করি, কেন বাসায় এত লোক আসে? সে বলে—বাবা, আমি জানি কেন আসে। আমি কিছু বলতে চাইনি, কারণ তুমি কষ্ট পাবে। কিন্তু আম্মু আর নেই। আমি নিজ চোখে দেখেছি, আম্মু আগুনে জ্বলছিল।

সোনিয়ার বাবা বাবুল হোসেন বলেন, ঘটনার পর অনেক জায়গায় খুঁজেও মেয়েকে পাইনি। পরে ডিএনএ নমুনা দিয়ে শনাক্ত করি। মরদেহ পুরোপুরি ক্ষতবিক্ষত তিন-চারটি টুকরো হয়ে গেছে।

চূড়ান্তভাবে শনাক্ত করার পর ২৫ জুলাই রাতে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের বাগনি বাড়ি পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।