আওয়ামী লীগের আমলে বিতর্কিত তিনটি নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ পর্যালোচনার মাধ্যমে ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুপারিশ দিতে কমিটি গঠন করা হয়েছিল গত ২৬ জুন। সেই কমিটি বাতিল করে কমিশন গঠন করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
তবে কমিটি ও কমিশনের সদস্যরা আগের মতোই রয়েছেন। অপরিবর্তিত রয়েছে কর্মপরিধিও। কমিশন গঠনের পর প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় এক মাস বাড়ানো হয়েছে।
আগে কমিটিকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছিল। এখন কমিশনকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে এবং এসব নির্বাচনে নানা কৌশলে জনগণের ভোট প্রদানের অধিকার ভূলুণ্ঠিত করে সাজানো প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষ দলকে নির্বাচিত করার জোরালো অভিযোগ রয়েছে।
তাই বিগত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে পর্যালোচনাপূর্বক ভবিষ্যতে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সুপারিশ দিতে ‘দ্য কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট-১৯৫৬’ এর আওতায় সরকার এ কমিশন গঠন করল।
যা করবে কমিশন
# বিগত ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনগুলোর বিষয়ে নির্বাচন পর্যবেক্ষক, দেশি-বিদেশি তদারকি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিবেদন এবং গণমাধ্যমে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ বিশ্লেষণ করবে।
# এসব নির্বাচনের বিভিন্ন দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এবং সার্বিকভাবে উল্লিখিত বিষয়গুলোর নিরপেক্ষতা ও গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ ও বিশ্লেষণ করবে।
# এসব নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ সীমাবদ্ধ করতে ও জনগণের ভোটাধিকার প্রদান বাধাগ্রস্ত করতে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল ও সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা বিশ্লেষণ করবে।
# নির্বাচনে তৎকালীন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার ভূমিকা বিশ্লেষণ।
# নির্বাচন কার্যক্রমে আইন প্রয়োগকারী ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা বিশ্লেষণ করবে।
# তৎকালীন নির্বাচন কমিশনগুলোর বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ যাচাই ও অনুসন্ধান করবে।
# বিশ্লেষণের ভিত্তিতে উল্লিখিত নির্বাচনগুলোতে অনিয়মের দায়-দায়িত্ব নির্ধারণ।
# ভবিষ্যতের সব নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও মানসম্পন্ন পর্যায়ে উপনীত করাতে সুচিন্তিত সুপারিশ দিবে।
# প্রয়োজনে যেকোনো দপ্তরের দলিল-দস্তাবেজ তলব করা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
কমিশন বাংলাদেশের যেকোনো স্থান পরিদর্শন, যেকোনো দপ্তরের দলিল-দস্তাবেজ তলব এবং সন্দিগ্ধ যেকোনো ব্যক্তিকে কমিশনে তলব ও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।
কমিশন ‘দ্য কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট-১৯৫৬’ এ উল্লিখিত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা দেবে এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন লজিস্টিক ও তথ্য সহায়তা দেবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।