জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহতদের তালিকায় অসংগতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে অংশ না নিয়েও নিহত হয়েছেন এমন অনেক ব্যক্তির নাম শহীদদের তালিকায় উঠে এসেছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং এসব নাম গেজেট থেকে বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। একইভাবে আহতদের তালিকাও পুনঃপরীক্ষা করা হচ্ছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে পেনিনসুলা ডেভেলপমেন্টের উদ্যোগে শিশু-কিশোরদের মাসিক পত্রিকা ‘মুগ্ধ জুলাই’-এর বিশেষ সংখ্যার প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম।
তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের স্মৃতি অম্লান রাখতে সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। জুলাই যোদ্ধাদের মর্যাদা দিতে সরকার একটি অধ্যাদেশ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই অধিদপ্তরটি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত হবে। জানুয়ারির শুরুতেই এ সংক্রান্ত পরিপত্র কেবিনেট সচিবালয় থেকে জারি হয়েছে। এরপর জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রাথমিক শহিদ তালিকা পেয়েছি এবং তা যাচাই-বাছাই শেষে গেজেট আকারে প্রকাশ করেছি। ফেব্রুয়ারিতে পেয়েছি আহতদের তালিকাও।’
ফারুক-ই-আজম আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এখনও পর্যন্ত পরিপূর্ণ তালিকা তৈরি করা যায়নি। ২০০৫ সালে মাত্র ৫৩৫ জন শহিদের একটি গেজেট প্রকাশিত হয়েছিল, এখনও সেটিই চূড়ান্ত তালিকা হিসেবে আছে। আমরা চাই না, জুলাই আন্দোলনের শহিদ ও যোদ্ধাদের ক্ষেত্রেও এমন অনিশ্চয়তা থেকে যাক। তাই এবার আমরা শুরু থেকেই সতর্কভাবে যাচাই-বাছাই করে যাচ্ছি।’
আহতদের পুনর্বাসন ও মাসিক ভাতা-সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকারের প্রচেষ্টায় তাদের পুনর্বাসন ও সম্মানজনক জীবন নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এসব তথ্য, তালিকা ও উদ্যোগ আমরা নিয়মিতভাবে লিপিবদ্ধ করছি।’
অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমরা দায়িত্বে না থাকলে বুঝতাম না, সচিবালয় ও মন্ত্রণালয় কীভাবে কাজ করে। বাস্তবে এসে দেখছি, বেশিরভাগ ব্যবস্থা সাধারণ মানুষের উপকারে নয়, বরং কাঠামোগত সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। সংস্কার করতে পারলে জনগণের প্রকৃত অধিকার নিশ্চিত হবে।’