ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট, ২০২৫

গোপালগঞ্জে মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি: সেনাসদর

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০৭:২৯ পিএম
ব্রিফিংয়ে কথা বলেন সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। ছবি- সংগৃহীত

গোপালগঞ্জে এনসিপির (জাতীয় নাগরিক পার্টি) কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতায় সেনাবাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি বলে জানিয়েছেন সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশন্সের পরিচালক কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গোপালগঞ্জে শুধু ইট-পাটকেল নয়, ককটেলও ছোড়া হয়েছিল। তখন সেখানে জীবননাশের হুমকি ছিল। সে প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলপ্রয়োগ করেছে। তবে সেখানে কোনো প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘কোনো রাজনৈতিক দল কোথায় সমাবেশ করবে সে অনুমতি দেয় স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ। আমাদের কাছে আগে থেকে কোনো গোয়েন্দা তথ্য ছিল না। গোপালগঞ্জে যা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গোপালগঞ্জের ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আশা করি, তদন্তে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ পাবে।’

সেনাবাহিনী কি নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি সহানুভূতিশীল—এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কাছে সবাই সমান। দায়িত্ব পালনে আমরা কখনো দলীয় বিবেচনায় কাজ করি না। যেখানে জনজীবন হুমকিতে থাকে সেখানে আমরা সহযোগিতা করি। গোপালগঞ্জেও সেটাই করেছি। যদি আমরা সঠিকভাবে দায়িত্ব না পালন করতাম, তাহলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারত।’

গোপালগঞ্জে এনসিপিকে নিরাপত্তা দেওয়া হলেও ভবিষ্যতে তাদের আর প্রটেকশন দেওয়া হবে না এমন গুঞ্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী কাউকে বিশেষভাবে সহায়তা করে না। গোপালগঞ্জে জীবননাশের হুমকি ছিল বলেই সহায়তা করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল শুধুই জীবন রক্ষা।’

পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান সন্ত্রাসী সংঘাত সম্পর্কে কর্নেল শফিকুল বলেন, ‘চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রতিরোধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা স্থানীয় ক্যাম্প থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছি এবং প্রয়োজনে অস্থায়ী বেস তৈরি করে অভিযান চালানো হচ্ছে।’

সেনাবাহিনীর মেজর সাদিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে অবগত আছি। তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’

মাদক ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের অগ্রগতি তুলে ধরে কর্নেল শফিকুল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৭৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে চাঁদাবাজি বা অন্যান্য অপরাধ রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর মধ্যে আরও কার্যকর সমন্বয় প্রয়োজন। গ্রেপ্তার করে বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তান্তরের পর আমাদের আর কিছু করার থাকে না।’