ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না, কুমড়াবাড়িয়া ও মহারাজপুর ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের কৃষি জমি এখন পানিতে নিমজ্জিত। কারণ, ওইসব এলাকার মাঠঘেরা হুমোদাহ বিল গত দুই সপ্তাহ ধরে জলাবদ্ধ। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন। এর ফলে আমন ধানের আবাদসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের সংকট। জলাবদ্ধতার কারণে আমন ধানের আবাদের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা দাবি করে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী গ্রামের কৃষকরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গান্না ইউনিয়নের গান্না, বাশিপাড়া, পাইকপাড়া, পোড়াবেতাই, বেতাই, ভাদালিডাঙ্গা, কালুহাটি, অশ্বস্থালী ও কুঠিদুর্গাপুর, মহারাজপুর ইউনিয়নের উত্তর ভবানিপুর, কুলবাড়িয়া, ভবানিপুর, মহারাজপুর, খামারাইল, রামনগর ও মহারাজপুর এবং কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ডেফলবাড়িয়া গ্রামের মাঠের পানি মধ্যবর্তী হুমোদাহর বিলে জমা হয়। এই পানি যশাইখালী খাল দিয়ে বেগবতী নদী দিয়ে নিষ্কাশন হয়। কিন্তু যশাইখালী খালে বিএডিসির স্লুইস গেট বন্ধ থাকায় পানি বের হতে না পেরে আশপাশের অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত হয়ে ধানের জমিসহ অন্যান্য ফসলি জমি। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এসব এলাকার কৃষক।
ভাদালিডাঙ্গা গ্রামের কৃষক টিটোন হোসেন বলেন, পানি আটকে থাকার কারণে বিলের মাঠে এবার আমন ধানের চাষ করা সম্ভব হবে না। খালের কপাট বন্ধ থাকায় এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়াও খালপাড়ে অপরিকল্পিত পুকুর খনন এই জলাবদ্ধতার জন্য দায়ী।
বিএডিসির (ক্ষুদ্র সেচ) সহকারী প্রকৌশলী সৌরভ কুমার বিশ্বাস বলেন, ডিসি মহোদয় আমাদের অবগত করেছেন। আমরা যশাইখালী যাচ্ছি। সুইজ খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বলে আমরা জেনেছি।
ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস দৈনিক রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ঝিনাইদহে গত ৪ দিনে ৩৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যশাইখালী খালে আমাদের একটি জল কপাট আছে। কিন্তু সেটা উন্মুক্ত আছে। কপাটের দুই পাশেই পানির লেভেল সমান। এই খাল দিয়ে বেগবতী নদীতে পানি নামে। বেগবতী, ফটকি, নবগঙ্গা, মধুমতী সব নদীই ভরাট ছিল। এ ছাড়াও বিষয়খালী, নলডাঙ্গা, কোলা অংশে নদীতে সেতু নির্মাণের জন্য ক্রস বাঁধ দেওয়া আছে সেই কারণে বেগবতী নদী দিয়ে পানি বের হতে পারছে না। আমরা বাধ অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্টদের অবগত করেছি। আশা করছি দু’এক দিনের মধ্যেই পানি নেমে যাবে। তবে এসব সমস্যার জন্য অপরিকল্পিত পুকুর খননও দায়ী।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, হুমোদাহের বিলে এখনো আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়নি। বেগবতী নদীর বিভিন্ন জায়গায় যে বাঁধ ছিল সেগুলো অপসারণের কাজ চলছে। আর বৃষ্টি না হলে দু’এক দিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে।