ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে মনে করে দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ। এমন তথ্য উঠে এসেছে নতুন প্রকাশিত এক জরিপে।
সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁও জাতীয় আর্কাইভ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘ডিআইজিডি পালস সার্ভে’-এর গবেষণাপত্র উন্মোচন অনুষ্ঠানে এই ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) ও ভয়েস ফর রিফর্ম যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘জনগণের মতামত, অভিজ্ঞতা ও প্রত্যাশা জুলাই ২০২৫’ শীর্ষক জরিপটি সারা দেশের ৬৪ জেলায় ৫ হাজার ৪৮৯ জন নারী ও পুরুষের মধ্যে টেলিফোনে পরিচালিত হয়। চলতি বছরের ১ থেকে ২০ জুলাই এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম, জনগণের সংস্কার প্রত্যাশা এবং আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর জনসমর্থন বিষয়ে মতামত নেওয়া হয়।
জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ২০২৪ সালের অক্টোবরে বিএনপিকে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ উত্তরদাতা। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে সেই হার কমে দাঁড়িয়েছে ১২ শতাংশে। একই সময়ে এনসিপির সমর্থন ২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছেছে। আর জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে ভোট পড়েছে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ।
এ ছাড়া ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের পক্ষে সমর্থন ছিল ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, যা ২০২৫ সালের জুলাইয়ে কমে দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশে।
পাশাপাশি ২০২৪ সালের অক্টোবরে অন্যান্য ইসলামিক দলের প্রতি সমর্থন ২ দশমিক ৬ শতাংশ থাকলেও চলতি বছরের জুলাইয়ে সেটি শূন্য দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে।
এদিকে কোন দলকে ভোট দেবেন এ বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক উত্তরদাতা। জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ২০২৪ সালের অক্টোবরে এই হার ছিল ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ, যা ২০২৫ সালের জুলাইয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশে।
জরিপ অনুযায়ী, ভোট না দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ১ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ। আর কাকে ভোট দেবেন তা জানাতে চাননি ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতা, যা গত অক্টোবরে ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ।
এর আগে, ৬ জুলাই সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) প্রকাশিত এক জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, আগামী নির্বাচনে বিএনপি ৩৯ শতাংশ, জামায়াত ২১ শতাংশ এবং এনসিপি ১৬ শতাংশ ভোট পাবে বলে মনে করে তরুণরা।
এ ছাড়া জরিপে অংশ নেওয়া তরুণরা মনে করেন, অন্যান্য ধর্মীয় দলগুলো পাবে ৪.৫৯ শতাংশ ভোট। তবে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পাবে ১৫.৮৪ শতাংশ, জাতীয় পার্টি পাবে ৩.৭৭ শতংশ এবং অন্যান্য দল পাবে শূন্য দশমিক ৫৭ শতাংশ ভোট।
সানেমের জরিপে আরও উঠে এসেছে, নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি পেলে আওয়ামী লীগ পাবে ১৫ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ ভোট।
দেশের সবকটি বিভাগের ওপর চালানো এ জরিপে অংশ নেন ১৫-৩৫ বছর বয়সি ২ হাজার মানুষ। প্রথমে ৮ বিভাগ থেকে ২টি করে জেলা বাছাই করা হয়। এরপর সেখান থেকে আবার দুইটি করে উপজেলা নির্বাচন করা হয়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন