অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে তার সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে (সিএনএ) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেন, ‘যদি নির্বাচন বৈধ না হয়, তাহলে তা আয়োজনের কোনো অর্থ নেই। আমার কাজ হলো একটি গ্রহণযোগ্য, পরিষ্কার ও উপভোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা।’ তিনি উল্লেখ করেন, বিচার ও সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন না করে নির্বাচন আয়োজন করলে দেশ পুরোনো সমস্যার বৃত্তেই ফিরে যাবে।
পতিত শেখ হাসিনা সরকারের কঠোর সমালোচনা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা ইত্যাদিসহ যেসব ব্যবস্থা পেয়েছি, তার সবই ছিল জালিয়াতির। সবকিছুর অপব্যবহার এবং শোষণ করা হয়েছে, যাতে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার তৈরি হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই সরকার এই সুযোগ নিয়ে পুরো বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজকে ধ্বংস করেছে। আমরা যখন দায়িত্ব নিলাম, তখন দেখেছি, রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের পর একটি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মতো পরিস্থিতি। সবকিছু ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ ভারত, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।
একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক অঞ্চলের ধারণা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা নেপাল এবং ভুটানকে অর্থনৈতিক অঞ্চলে আনতে পারি। ভারতের সেভেন সিস্টার্সও (সাতটি রাজ্য) এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাকতে পারে। কারণ, আমরা বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে একই সুবিধা ভাগ করে নিতে পারি।’
এই নির্বাচনটি শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রথম জাতীয় নির্বাচন। বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম শেষে একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।