শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ঘিরে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)।
এসবির নথিতে উঠে আসে, আসলে বইটি সংকলন করেছিলেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী। এর বিনিময়ে তিনি পান আইজিপি’র পদ। আর তার সহযোগীরা পেয়ে যান রাজধানীতে কোটি টাকার ফ্ল্যাট ও নগদ এক কোটি টাকা।
এ বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকতা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, দুর্নীতি করেছেন জাবেদ পাটোয়ারী। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উচিৎ এ নিয়ে অনুসন্ধান করা।
২০১২ সালে প্রকাশ পায় শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী। এর ভূমিকায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাবি করেছেন, শেখ মুজিবের চারটি খাতা ঘেঁটে সম্পাদনা-সংশোধনের পর প্রস্তুত করা হয়েছে বইটি। যাতে উঠে এসেছে, পাকিস্তান আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনসহ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নানা ঘটনা ও চক্রান্তের গল্প।
শেখ হাসিনাকে প্রায়ই এই বই থেকে বিভিন্ন উদ্ধৃতি দিতে দেখা যেত, নেতাকর্মীদের বলতেন এখান থেকে শিক্ষা নিতে।
এই অসমাপ্ত আত্মজীবনী নিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখা এসবি থেকে মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের একাধিক নথিতে দেখা যাচ্ছে, এই বইটি আসলে লিখেছেন সাবেক পুলিশ প্রধান জাবেদ পাটোয়ারী ও তার নেতৃত্বে ১২৩ সদস্যের একটি বিশাল দল।
স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সান্নিধ্য এবং আনুগত্য নিশ্চিত করতে বইটি লেখেন জাবেদ পাটোয়ারী ও তার দল। এর ফলে ২০১৮ সালে জাবেদ নিয়োগ পান আইজিপি হিসেবে।
আত্মজীবনী বইটি লিখতে যে ১২৩ জন সদস্য কাজ করে তারা পায় রাজধানীর ধানমন্ডি, বসুন্ধরা, মিরপুরে কোটি টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট এবং নগদ এক কোটি করে টাকা।
এর সরাসরি তত্ত্ববাধান করেন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে পাওয়া যায়নি সাবেক এই আইজিপিকে। তবে একটি সরকারি সূত্রের দাবি, ৫ আগস্টের পর সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে থেকে জাবেদকে বরখাস্তের পর দেশে ফিরতে বলা হলেও সেখান থেকে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে।
অসমাপ্ত আত্মজীবনী নিয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো এসবিতে এ সংক্রান্ত নথি গায়েব করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও তহবিল অপব্যবহার করে যদি কারো লাভবান হওয়া প্রমাণিত হয়, তবে তা ফৌজদারি অপরাধ। দুদকের উচিত এসব অভিযোগের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন