জুলাই আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামিদের জামিন দেওয়ায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের পদত্যাগ দাবি করেছেন জুলাই শহীদের স্বজনরা। সেই সাথে পুলিশের আইজি, সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারপতি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারীরও পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা।
রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার এক মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত ‘ইমাম হাসান তায়িম’সহ সব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার হত্যাকারীদেরকে জামিন দেওয়ায় বিচারপতিদের ও আইন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে এবং জুলাইয়ের সকল হত্যাকারীদের বিচারের জন্য বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব মানববন্ধনে এই দাবি করেন তারা।
কর্মসূচির আয়োজন করে জুলাই শহীদ ও আহতদের পরিবারবর্গ।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন: শহীদ নাফিজের বাবা গোলাম রহমান, শহীদ জুলাই সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শহীদ ইমাম হাসান তায়িমের ভাই রবিউল আউয়াল, শহীদ পরিবারের সদস্য বুলবুল কবীর, শহীদ শেখ শাহরিয়ার শেখ মতিনের বাবা মোহাম্মদ আব্দুল মতিন এবং শহীদ আলভী বাবা আবুল হাসান প্রমুখ।
সরকারের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, ‘বিগত এক বছর হয়ে গেল এখনো কারও বিচার হয়নি। আপনারা ক্ষমতায় এসে শহীদ পরিবারের কথা ভুলে গেছেন। আমাদের কেন বিচারের জন্য আপনাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে? স্বজন হারানোর ব্যথা আপনারা কী বুঝবেন? আপনাদের তো কোনো স্বজন হারায় নাই। যেসব আসামিদের ধরা হয়েছে, তাদের জামিন দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। আপনারা কি আবার হাসিনাকে পুনর্বাসন করতে চাচ্ছেন? আইন উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে হুঁশিয়ারি করে বলতে চাই, আমাদের আবার রাস্তায় নামাবেন না। আমরা জানি, রাস্তায় কীভাবে প্রতিবাদ করতে হয়। তা আমাদের সন্তানরা আমাদের শিখিয়ে গেছে।’
এ সময় তাদের পক্ষ থেকে ৪ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো:
- হাইকোর্টের যেসব বেঞ্চ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হত্যা মামলার আসামিদের জামিন দিয়েছে সেসব বিচারপতিদের বরখাস্ত করতে হবে।
- এত দিন ধরে আসামিদের জামিন দিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তারপরও আইন উপদেষ্টা কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে পদত্যাগ করতে হবে।
- আসামিদের স্বজনপ্রীতি করে অথবা আর্থিক লেনদেনের কারণে আসামি গ্রেপ্তার না করার কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী খোদাবক্স চৌধুরীকে পদত্যাগ করতে হবে।
- স্বজনপ্রীতি অথবা আর্থিক লেনদেনের কারণে আসামি গ্রেপ্তার না করার কারণে পুলিশের আইজিপিকে পদত্যাগ করতে হবে।
দাবি মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি ঘোষণা করবেন তারা।