থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে একজন থাই সৈন্য নিহত হয়েছেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে সোমবার থাই সেনাবাহিনীর বরাত দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছে। জুলাইয়ে পাঁচ দিনের সংঘাতের পর এই ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছিল- সাম্প্রতিক এ ঘটনা সেই সমঝোতার বড় ধরনের লঙ্ঘন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
ব্যাংকক পোস্ট জানায়, সীমান্ত সহিংসতা ঘিরে দুই দেশই একে অপরকে দোষারোপ করছে। এতে করে ওই এলাকায় ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ও সীমান্ত পরিস্থিতির অস্থিতিশীলতা আরও স্পষ্ট হয়েছে। যদিও শান্তি বজায় রাখতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
গালফ নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘর্ষটি ঘটেছে কম্বোডিয়ার প্রিয়া ভিহিয়ার প্রদেশের ঐতিহাসিক প্রিয়া ভিহিয়ার মন্দিরসংলগ্ন এলাকায়, যা থাইল্যান্ডের সুরিন ও সি সা কেট প্রদেশের সীমান্ত ঘেঁষা।
থাইল্যান্ড অভিযোগ তুলেছে, কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী প্রথমে কামান ও রকেট নিক্ষেপ করে হামলা চালায়। এতে একজন থাই সৈন্য মারা যান এবং অন্তত দুইজন আহত হন।
জবাবে রয়্যাল থাই আর্মি (আরটিএ) এফ-১৬ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করে কম্বোডিয়ান অবস্থানে অন্তত আটটি বোমা নিক্ষেপ করে। যার একটি নিক্ষেপ হয় সীমান্তের একটি ক্যাসিনোতে- যা থাই পক্ষের দাবিতে সামরিক ফাঁড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
থাই সেনাবাহিনীর মুখপাত্র উইনথাই সুভারি জানান, সোমবার ভোরে উবোন রাতচাথানি প্রদেশ সংলগ্ন সীমান্তে কম্বোডিয়ান বাহিনীর গুলিতে একজন সৈন্য নিহত এবং চারজন আহত হন। ‘সহায়ক আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আকস্মিক হামলা’ চালানো হয় বলে দাবি তার।
অন্যদিকে কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোচেতা অভিযোগ করে জানিয়েছেন, সোমবার ভোরেই থাই সেনাবাহিনী প্রিয়া ভিহিয়ার ও ওদ্দার মিঞ্চে প্রদেশে কম্বোডিয়ান বাহিনীর ওপর আক্রমণ শুরু করে। কম্বোডিয়া কোনো পাল্টা হামলা চালায়নি বলেও দাবি করেন তিনি।
কম্বোডিয়ার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, প্রথম গোলাগুলি চালিয়েছে থাই বাহিনী, তারা ট্যাঙ্ক ও ছোট অস্ত্র ব্যবহার করেছে। তবে কম্বোডিয়ার কোনো হতাহতের খবর তারা নিশ্চিত করেনি।
উভয় দেশের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
দুই দেশই সংঘর্ষের জন্য একে অপরকে দায়ী করায় বড় ধরনের সামরিক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে- যা সীমান্তজুড়ে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।


