কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে দেশের সর্বউত্তরের জেলা পঞ্চগড়। রাতভর টিপ টিপ করে ঝরছে কুয়াশা; ভোর হতেই চারদিক ঢেকে যায় সাদা চাদরে। দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায় হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পেরোতে না পেরোতেই হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় জেলাজুড়ে জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
শীতের এই তীব্রতায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। ভোরের প্রচণ্ড ঠান্ডায় মাঠে-ঘাটে কাজে নামা দিনমজুরদের জন্য হয়ে উঠেছে রীতিমতো কষ্টসাধ্য। অনেকেই সকালে কাজের খোঁজে বেরিয়ে কনকনে শীতে অসহায় অবস্থার শিকার হচ্ছেন।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়লে ধীরে ধীরে কুয়াশা কাটতে শুরু করে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভোর থেকেই জেলাজুড়ে ঘন কুয়াশার দাপট দেখা যায়। সকাল ৮টা পর্যন্ত সড়কপথ, খেত-খামার ও মাঠ-ঘাট কুয়াশার আবরণে ঢাকা পড়ে থাকে। সপ্তাহজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডার তীব্রতা কিছুটা কমলেও বিকেলের পর আবারও শীত জেঁকে বসে। সন্ধ্যা নামলেই কনকনে শীত অনুভূত হয়, যা পরদিন সকাল পর্যন্ত স্থায়ী থাকে।
এই পরিস্থিতিতে সকালবেলা কাজে বের হওয়া কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ চোখে পড়ার মতো। অনেকেই বাড়ির আঙিনায় কিংবা রাস্তার মোড়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
পঞ্চগড়ের ধাক্কামারা এলাকায় পথচারী অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী বলেন, ‘আজ চারদিক ঘন কুয়াশায় ঢেকে গেছে। রাস্তাঘাট কুয়াশায় ভিজে আছে। কনকনে ঠান্ডায় সাধারণ মানুষ খুব কষ্টে আছে। দেশের বিত্তবানদের উচিত শীতবস্ত্র নিয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ানো।’
আরেক পথচারী আব্দুল মালেন বলেন, ‘ঘন কুয়াশা আর শীতে শরীর একেবারে হিম হয়ে যাচ্ছে। হাত-পা অবশ লাগছে-চলাফেরা করাই কষ্টকর হয়ে উঠেছে।’
তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ জানান, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে তাপমাত্রা এক অঙ্কে নেমে আসতে পারে। সে সময় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে শীত মোকাবিলায় প্রশাসনের প্রস্তুতির কথাও জানিয়েছেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কাজী সায়েমুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘শীত মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার পাঁচটি উপজেলায় প্রায় ৩০ লাখ টাকার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে।’


