কোনো সমাধান ছাড়াই আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার বৈঠক শেষ হয়েছে। ফলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) আবারও আলোচনায় বসবেন সরকারের প্রতিনিধিরা।
বুধবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর রেলভবনে শিক্ষার্থীদের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়। প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা চললেও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বৈঠক শেষে ফাওজুল কবির জানান, সমস্যা সমাধানের জন্য যে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তাদের পাঁচ জন বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। আগামীকাল পুরো কমিটি নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অংশগ্রহণ করবেন শিক্ষক প্রতিনিধি ও অন্যান্য প্রকৌশলীও।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যা ঘটেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত। পুলিশের প্রতিনিধি এ বিষয়ে ক্ষমা চাইবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে বারবার উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়া কাম্য নয়।
অন্যদিকে, বৈঠকে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা জানান, বৈঠকের বিষয়বস্তু ও সার্বিক অবস্থার বিস্তারিত আন্দোলনরত সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনা করেই জানানো হবে।
পাঁচ দফা হলো:
১. স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ক্ষমা ও জবাবদিহি
প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে আন্দোলনকারীদের সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে জবাবদিহি করতে হবে।
২. কমিটি সংস্কার
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিসহ প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের স্টেকহোল্ডারদের অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি অবিলম্বে সংস্কার করতে হবে।
৩. তিন দফা দাবির দ্রুত প্রজ্ঞাপন
শিক্ষার্থী ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়ে কমিটি সংস্কার করে পেশকৃত তিন দফা দাবিকে দ্রুততম সময়ে মেনে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট তিন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে আজই এর নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে।
৪. চিকিৎসা ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ
আন্দোলনের সময় হামলায় আহত সকল শিক্ষার্থীর চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকার বহন করবে।
আন্দোলন চলাকালীন শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এবং পুলিশ দিয়ে যৌক্তিক আন্দোলনে আর কোনো হামলা করা যাবে না।
৫. অভিযুক্তদের আইনি ব্যবস্থা
শিক্ষার্থী রোকনের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা এবং চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে হামলার জন্য ডিসি মাসুদকে বহিষ্কার করতে হবে।
উল্লেখ্য, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নামের আগে প্রকৌশলী ব্যবহার করতে না দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসসি ইঞ্জিনিয়াররা। অন্যদিকে, উপসহকারী প্রকৌশলী পদে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগের সুযোগ না দেওয়াসহ ৭ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন