বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৫, ০৫:২০ পিএম

সাত মাসে শিশু ধর্ষণ বেড়েছে ৭৫ শতাংশ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৫, ০৫:২০ পিএম

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে তিন শতাধিক শিশুকন্যা ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৯ জন শিশুর বয়স মাত্র ০ থেকে ৬ বছরের মধ্যে এবং বাকিরা ৭ থেকে ১৭ বছর বয়সি।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এতে আরও বলা হয়, এসব ঘটনার মধ্যে দেড় শ ঘটনার কোনো মামলা হয়নি। অর্থাৎ সেসব ঘটনায় বিচার থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে ভুক্তভোগীকে।

বেসরকারি সংস্থাগুলো এও বলছে, শুধু এসব ঘটনাই নয়, বহু ধর্ষণের ঘটনা অপ্রকাশিতই রয়ে গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

এতে আরও জানানো হয়, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয় ১৭৫ জন। অর্থাৎ ২০২৫ সালের প্রথম সাত মাসে শিশু ধর্ষণের ঘটনা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৭৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্যের বরাদ দিয়ে বলা হয়, এই ধর্ষণ মামলাগুলোর মধ্যে ৬০ শতাংশ ভুক্তভোগী ১৮ বছরের কমবয়সি শিশু। শুধু মেয়েশিশুই নয়, ছেলেশিশুরাও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে ৩০ জন ছেলেশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি, যা জনসম্মুখে কমই উঠে আসে।

এমন পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ), সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। সংস্থাগুলো এও বলছে, ‘পারিবারিক ও সামাজিক উভয় পরিবেশেই শিশুরা যে গভীর ঝুঁকির মধ্যে আছে, এই পরিসংখ্যানটি তার স্পষ্ট প্রমাণ।’

এ জন্য সরকারকে শিশু সুরক্ষা আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাগুলো।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর সুমন সেনগুপ্ত, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস এই যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। বিজ্ঞপ্তিটি পাঠান ইয়ুথ অ্যান্ড সোশ্যাল কোহেশনের লিড ও মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনের সমন্বয়ক ওয়াসিউর রহমান তন্ময়।

সংস্থাগুলো বলছে, শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা একটি জাতীয় সংকট। এ সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে বহুমুখী একটি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। যৌন নির্যাতনের পরিসংখ্যানে থাকা প্রতিটি সংখ্যার পেছনে রয়েছে অপূরণীয় ক্ষতির শিকার একজন শিশু ও তার পরিবার, যারা ক্রমাগত সামাজিক মর্যাদাহানি, মানসিক আঘাত ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। এসব ঘটনা অপ্রকাশিত বা অমীমাংসিত থেকে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে শিশুদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ব্যর্থতা।

সংস্থাগুলো আরও জানায়, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে শিশুদের নিরাপত্তা ও কল্যাণের ওপর। নিরাপদ পরিবেশের অভাবে শিশুর সর্বাঙ্গীণ বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় এবং তাদের জীবনে একটি স্থায়ী ক্ষত জায়গা করে নেয়। শিশুদের সহিংসতা থেকে সুরক্ষা দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। এটি আমাদের নৈতিক, আইনগত ও জাতীয় দায়িত্ব।

এ বিষয়ে বেশ কিছু সুপারিশও করা হয়েছে। এগুলো হলো:

১.  আইন প্রয়োগ ও জবাবদিহিতা জোরদার

  •  শিশু ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনা দ্রুত ও সঠিকভাবে তদন্ত করা এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা।
  •  মামলার অগ্রগতির ওপর কড়া নজরদারির জন্য শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
  •  শিশু সুরক্ষাবিষয়ক সমাজকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ১০৯৮ হেল্পলাইন ও শিশু সুরক্ষা ইউনিট (সিপিইউ)-এর সেবা আরও     শক্তিশালী করা।
  •  ধর্ষণ মামলার তদন্ত ১৫ দিনের মধ্যে এবং বিচার ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করার সংশোধিত বিধান কার্যকর করা।
  •  উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ের শিশু কল্যাণ বোর্ডের তদারকি কার্যক্রম আরও জোরদার করা।

২.  শিশু-সংবেদনশীল বিচার ব্যবস্থা

  •  নির্যাতনের শিকার শিশুদের মানসিক আঘাত (ট্রমা) কমিয়ে আনতে শিশুবান্ধব আদালত ও আইনগত প্রক্রিয়া তৈরি করা।
  •  নির্যাতনের শিকার শিশু ও তাদের পরিবারকে আইনগত ও মানসিক সহায়তা প্রদান।

৩.  কমিউনিটি-ভিত্তিক প্রতিরোধ ও সুরক্ষা

  •  সামাজিকভাবে শিশুর মর্যাদাহানি কমিয়ে আনতে সারা দেশে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালানো। সঙ্গে সঙ্গে শিশু     অধিকার রক্ষায় সচেতনতা এবং দ্রুত আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে উৎসাহিত করা।
  •  শিশুদের ঝুঁকি আগে থেকে বুঝে ব্যবস্থা নিতে কমিউনিটি-ভিত্তিক শিশু সুরক্ষা কমিটিগুলোকে আরও শক্তিশালী করা।   কমিটিগুলো ঝুঁকি মোকাবিলা ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করবে।

৪.  নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকরণ

  •  স্কুল ও মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হয়রানির ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়ন।
  •  গোপনে অভিযোগ করার ব্যবস্থা রাখা এবং নির্যাতনে জড়িত শিক্ষক বা কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ।

৫.  জাতীয় শিশু সুরক্ষা কৌশল প্রণয়ন

  •  আইন প্রয়োগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও সামাজিক সেবা সমন্বিত একটি বিস্তৃত জাতীয় কৌশল তৈরি ও বাস্তবায়ন।

৬.  হেল্পলাইন সম্পর্কে সচেতনতা ও ব্যবহার বাড়ানো

  •  শিশু নির্যাতন সম্পর্কিত অভিযোগ যেন জাতীয় হেল্পলাইন ৯৯৯ ও ১০৯৮-তে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়, সেই বিষয়ে   জনসচেতনতা ও আস্থা বৃদ্ধি।

৭.  দায়িত্বশীল গণমাধ্যম

  •  ধর্ষণের ঘটনার সংবাদ সংগ্রহের সময় ভুক্তভোগীর সামাজিক মর্যাদাহানি এড়াতে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা।
  •  এ সংক্রান্ত বিচার ও শাস্তির সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে অপরাধীদের জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনে জোর দেওয়া।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!