অবশেষে রাজধানীর আকাশে ধরা দিল এক অনন্য মহাজাগতিক দৃশ্য। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দেখা গেছে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। এই সময় চাঁদ কালচে লাল রঙ ধারণ করে পরিণত হয় ‘ব্লাড মুন’-এ।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রোববার রাত ৯টা ২৭ মিনিট ৬ সেকেন্ডে চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয়। কেন্দ্রীয় চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয় রাত ১২টা ১১ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডে এবং শেষ হয় সোমবার ভোর ২টা ৫৬ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে। পুরো গ্রহণটি স্থায়ী হয় প্রায় ৭ ঘণ্টা ২৭ মিনিট, এর মধ্যে পূর্ণগ্রাস অবস্থাটি ছিল ৮২ মিনিটব্যাপী- ২০২২ সালের পর এটি ছিল সবচেয়ে দীর্ঘ পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ।
চন্দ্রগ্রহণের শুরুর দিকে চাঁদের কিছু অংশ ধীরে ধীরে পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে মধ্যরাতের দিকে চাঁদের চিরচেনা রুপালি রঙ বদলে গিয়ে তা পরিণত হয় এক ভয়াল, রহস্যময় লালচে রঙে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই দৃশ্যকে বলেন ‘ব্লাড মুন’।
কেন হয় চন্দ্রগ্রহণ?
চন্দ্রগ্রহণ ঘটে তখনই, যখন পৃথিবী সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে চলে আসে। এতে চাঁদের ওপর পড়ে পৃথিবীর ছায়া। কিন্তু চাঁদের কক্ষপথ হেলে থাকায় প্রতি পূর্ণিমায় গ্রহণ দেখা যায় না। সাধারণত বছরে মাত্র দুই থেকে তিনবার এই দৃশ্য দেখা যায়।
বিস্তৃত এলাকা জুড়ে দেখা গেছে গ্রহণ
এই পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণটি পূর্বে ইন্দোনেশিয়ার হিলা দ্বীপ থেকে শুরু করে পশ্চিমে কেনিয়ার মোমবাসা পর্যন্ত এলাকা থেকে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকেও এ মহাজাগতিক দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করা গেছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
তবে উত্তর আমেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল এবং দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় ৯০ শতাংশ অঞ্চল থেকে এই চন্দ্রগ্রহণ দেখা যায়নি।
বিরল মহাজাগতিক অভিজ্ঞতা
আকাশে এমন চাঁদের রূপ সচরাচর দেখা যায় না। তাই রাতভর অনেকেই বাড়ির ছাদে উঠে, টেলিস্কোপ কিংবা খালি চোখে এই মহাজাগতিক দৃশ্য উপভোগ করেন।
এটি শুধু একটি দৃষ্টিনন্দন দৃশ্যই নয়, বরং মহাকাশ ও জ্যোতির্বিজ্ঞানে আগ্রহীদের জন্য এক দুর্লভ অভিজ্ঞতাও বটে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন