বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫, ০৮:৩০ পিএম

জাতীয় নির্বাচনের অজুহাতে স্থানীয় সরকার ভোট হয়নি: বদিউল আলম

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫, ০৮:৩০ পিএম

বদিউল আলম মজুমদার। ছবি- সংগৃহীত

বদিউল আলম মজুমদার। ছবি- সংগৃহীত

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার অভিযোগ করেছেন, জাতীয় নির্বাচনের অজুহাতে প্রথমে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হতে দেওয়া হয়নি।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত এক সেমিনারে বদিউল আলম এ অভিযোগ করেন।

সেমিনারের শিরোনাম ছিল, ‘বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব? পূর্ব এশিয়া থেকে কিছু শিক্ষা এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার ও অন্যান্য কমিশনের প্রতিবেদন সম্পর্কে চিন্তাভাবনা।’ এতে সভাপতিত্ব করেন পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক খুরশীদ আলম।

বদিউল আলম বলেন, ‘আমরা নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে প্রথমেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। জরিপেও দেখা গেছে, জনগণের বড় অংশ এই নির্বাচন চায়। কিন্তু রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক বাধার কারণে সেই নির্বাচন আর হয়নি।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনকে অজুহাত দেখিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ঠেকানো হয়েছে। এমনকি নির্বাচন কমিশনও আমাদের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিল।’

তার দাবি, এ সিদ্ধান্তের পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কাজ করেছে। কারণ, যে দল ক্ষমতায় আসে, তারাই পরে সুবিধাজনক সময়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেয়।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমেদ প্রশ্ন তুলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কেন দ্রুত স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিল না।

তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর স্থানীয় সরকারের চেয়ারম্যান-কাউন্সিলররা পালিয়ে গেলেন। জন্মনিবন্ধন, ডেথ সার্টিফিকেটসহ জনসেবা কার্যক্রম থমকে গেল। অথচ তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হলে নতুন প্রতিনিধিরা দায়িত্ব নিতে পারতেন। বর্তমান কাঠামোর মধ্যেও এই নির্বাচন সম্ভব ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো তা চায়নি। তারা চেয়েছে সংসদ সদস্যদের জমিদারি বহাল রাখতে।’

মনজুর আহমেদ আরও বলেন, পুরোনো রাজনৈতিক দলগুলো কেবল জাতীয় নির্বাচনের দিকে মনোযোগী থাকে। বিকেন্দ্রীকরণ বা স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করার প্রশ্নে তারা নীরব। এর পেছনে ক্ষমতা ও স্বার্থের রাজনীতি কাজ করছে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আইনুন নিশাত বলেন, ‘গ্রামের একটি স্কুলে বেঞ্চ বসানোর জন্যও সংসদ সদস্যদের কাবিটার টাকার বরাদ্দে সিদ্ধান্ত দিতে হয়। অথচ সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব নীতিনির্ধারণ ও দেশ পরিচালনা করা। কিন্তু তারা স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাব বিস্তার করে দুর্নীতির সুযোগ তৈরি করছেন। এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে।’

পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, ‘গ্রামীণ কর্মসংস্থান থমকে গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী দুই দশকে কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। অথচ দেশের ৪৪ শতাংশ ব্যবসা শুধু ঢাকা-চট্টগ্রামে কেন্দ্রীভূত। স্থানীয় সরকারের বাজেট জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ছাড়া এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।’

পিআরআইয়ের পরিচালক আহমেদ আহসান সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। দায়বদ্ধতা স্থানীয় পর্যায়ে না থাকলে জনগণ সরাসরি উপকৃত হয় না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানে যে সংকট আমরা দেখছি, সবই এই কেন্দ্রীভূত কাঠামোর ফল।’

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে বড় কেন্দ্রীভূত দেশগুলোর একটি। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো বিকেন্দ্রীকরণে গুরুত্ব দেওয়ায় দ্রুত উন্নতি করেছে। বাংলাদেশের উচিত ধীরে ধীরে হলেও শক্তিশালী স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার দিকে এগোনো।’

এ সময় বদিউল আলম মজুমদার বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা বলাটাই এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। তিনি দাবি করেন, ‘আমরা সোচ্চার থেকেছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের বক্তব্য বিরোধীদের উচ্চকণ্ঠে হারিয়ে গেছে। তবুও বিকেন্দ্রীকরণের দাবি তোলা ছাড়া বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
 

Link copied!