নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০ তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ২০২৪ সালের আগস্টে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর, দ্বিতীয়বারের মতো জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন তিনি।
এবারের ভাষণে ইউনূসের বক্তব্যে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরের বিভিন্ন বিষয় গুরুত্ব পাবে বলে জানা গেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, এই সময়ে অন্তবর্তীকালীন সরকার যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, সেগুলোও উঠে আসবে জাতিসংঘের প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে।
জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে কী কী বিষয় থাকতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ব্রিফিং এ সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রেস সচিব বলেন, ‘গত জুলাই আগস্টে (২০২৪ সালের) যে অভূতপূর্ব পরিবর্তন হলো, সেগুলোর ওপরে ওনার (অধ্যাপক ইউনূস) বক্তব্য থাকবে। একটা বছরে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এই অন্তবর্তী সরকার হয়েছে, সেগুলোর বিষয় থাকবে।’
‘তিনটা যে প্রধান বিষয় ছিল সংস্কারের কাজ শুরু করা, নির্বাচনের কাজ করা এবং বিচারকাজ শুরু করা, সেগুলো থাকবে। আপনারা দেখছেন যে, বিচারের কাজ খুব ভালো গতিতে চলছে। সংস্কারের কাজও গুছিয়ে আনা হয়েছে, এখন শুধু জুলাই সনদ স্বাক্ষর বাকি। আশা করছি, রাজনৈতিক দলগুলো শান্তিপূর্ণভাবে এর একটা সমাধান করবেন। এরপর বাকি নির্বাচন। নির্বাচনের ক্ষেত্রে উনি ইতোমধ্যে একটি টাইমলাইন দিয়েছেন যে, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে হবে।’
শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন হবেই, আমরা বার বার বলছি। এ নিয়ে কোন সন্দেহ নাই।
অন্যান্য বৈশ্বিক বিষয়ও ইউনূসের ভাষণে উঠে আসবে বলে উল্লেখ করেন প্রেস সচিব। তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক বিষয় যেমন জাতিসংঘের সংস্কার, গাজার মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে উনি কথা বলবেন। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কথা বলবেন, জলবায়ু পরিবর্তন কীভাবে বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং কতটা ভয়ানক হতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন; সে বিষয়ে উনি কথা বলবেন।’
প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, ‘ওনার যে, থ্রি-জিরো নিয়ে কাজ করেন, যেটার উনি অ্যাডোকেসি করেন, সেটা নিয়েও কথা বলবেন। শুন্য বেকারত্ব, শুন্য দারিদ্র্য এবং শুন্য কার্বন নিঃসরণ; এগুলোর বিষয়ে উনি জোরালোভাবে কথা বলবেন। কারণ এই মানবসভ্যতাকে তো আমাদের বাঁচাতে হবে। আমরা যেভাবে ভোগ করছি, অপচয় করছি, যেভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে, সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন।’
শুক্রবার সকালে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের চতুর্থ দিনের সকালের পর্ব শুরু হবে ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর ভাষণের মধ্যে দিয়ে। এরপর একে একে ভাষণ দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরফি, চীনের স্টেট কাউন্সিলের প্রধান লি কিয়াং, সেইন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডিসের প্রধানমন্ত্রী রাফ গনজালভেজ, লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী লু ফ্রেইডেন, আয়ারল্যান্ডের টিশক (প্রধানমন্ত্রী পদমর্যাদার) মাইকেল মার্টিন, গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোন্স মিসোতাকিস, মাল্টার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট আবেলা এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেইরং তোবগে। এদের পরেই ইউনূসের ভাষণ দেওয়ার পর্ব নির্ধারিত রয়েছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন