ঢাকা শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫

এই দেশ তরুণদের, তারাই পথ দেখাবে: ড. ইউনূস

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২৫, ০৬:২৯ পিএম
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

দেশে ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে অর্ধেক মানুষ হলো ২৭ বছরের নিচে। এটাই আমাদের সম্পদ। এই দেশ তরুণদের দেশ, তারাই পথ দেখাবে। সারা দুনিয়া অবাক বিস্ময়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে—কখন আমরা তাদের সাহায্য করব এই তরুণদের পাঠিয়ে। কারণ সারা দুনিয়াতে তরুণদের অভাব বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো অসম্ভবকে সম্ভব করেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তারা ইতিহাসে অক্ষয় হয়ে থাকবে। তাদের নাম অক্ষয় হয়ে থাকবে। লোকে চিন্তা করবে, তারা কীভাবে এটা করেছিল।

আজকে এই দিনটি মহান দিন উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটার কথা চিন্তা করলে গা শিহরে ওঠে, এমন একটি দিন। সেটা শুধু জাতির জন্য না, সারা পৃথিবীর জন্য একটা বড় রকমের উদাহরণ হয়ে থাকবে। বহু জায়গায় সেটা পাঠ্যপুস্তকে থাকবে। ক্লাস রুমে আলোচনা হবে। রাজনীতিবিদদের মধ্যে এটা নিয়ে আলোচনা হবে বিভিন্ন দেশে—কোনটা ঠিক, কোনটা বেঠিক, তারা কী বলল, আমরা কী চাই। তারা চেষ্টা করে দেখবে তাদের দেশে সেটা সম্ভব কি না। যে উদাহরণ আমাদের দেশের রাজনীতিবিদরা সৃষ্টি করেছেন, সেটা দেশের জন্য তো বটেই, সারা পৃথিবীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।’

গণঅভ্যুত্থানের নায়কদের কথা স্মরণ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তাদের কাছে জাতি চির কৃতজ্ঞ থাকবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা পুরোনো কথাবার্তা সব পাল্টে ফেলে নতুন কথাগুলো আমাদের জাতীয় জীবনে নিয়ে আসলাম। আমাদের সংবিধানের পরিবর্তনের মধ্যে নিয়ে আসলাম। সরকার চালানোর ভেতরে নিয়ে আসলাম। অনেক বিষয় এসেছে এই পরিবর্তনের ভেতরে। এই পরিবর্তন এখন আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা সেই পথে অগ্রসর হবে। আমাদের জন্য আজকে নবজন্ম। আমাদের নবজন্ম হলো আজকে। এই স্বাক্ষরের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করলাম।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “শুধু বাংলাদেশ না, পৃথিবীকে পরিবর্তন করার সুযোগ তাদের কাছে এসেছে। আমাদের কাছে দরখাস্ত আসছে, ‘আমাদের কাছে এতজন পাঠান, আমাদের কাছে যত পারেন পাঠান।’ এটা তো ২০২৫ সালের কথা—২০২৬ সালে কী বলবে? ২০২৭ সালে কী বলবে? হাতজোড় করে করে আসবে। কারণ আমাদের তরুণরা ছাড়া পৃথিবীতে এত তরুণ দিতে পারে, এত তাজা শক্তি দিতে পারে, এত সৃজনশীল মানুষ দিতে পারে, এত বিশ্বস্ত মানুষ দিতে পারে—দেশ খুঁজে পাওয়া যাবে না।”

তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদের মাধ্যমে আমরা আরেকটি বড় কাজ করলাম, আমরা বর্বরতা থেকে সভ্যতায় আসলাম। আমরা এক বর্বর জগতে ছিলাম, যেখানে আইন-কানুন ছিল না—মানুষ যা ইচ্ছা তা করতে পারত। এখন আমরা সভ্যতায় আসলাম এবং এমন সভ্যতা আমরা গড়ে তুলব। মানুষ ঈর্ষার চোখে আমাদের দেখবে। কাজেই সেটা সনদ-পরবর্তী জীবন আমরা কীভাবে গঠন করব তার ওপর নির্ভর করবে।’