সারা দেশে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জোয়ার বইছে, এবং ফেব্রুয়ারিতেই ভোট বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘নির্বাচনী ইশতেহারে প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে দেশের নাগরিকরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটে অংশ নিতে পারবেন।
প্রেস সচিব জানান, নির্বাচনের প্রস্তুতি তদারকি ও আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দিন-রাত কাজ করছেন। তিনি বলেন, ‘সারা দেশে নির্বাচনের জোয়ার বইছে। ফেব্রুয়ারি মাসে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এ জন্য প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।’
শফিকুল আলম আরও বলেন, মানুষ সুশাসন চায়, কিন্তু তা একদিনে প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। ‘বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়নে ১০-১৫ বছর সময় লেগেছে। নেপালে এমন সংস্কার করতে ৯ বছর লেগেছে। আমাদের দেশে নির্বাচন শেষে সংলাপ ও আলোচনা অব্যাহত থাকবে, যা সুষ্ঠু ভোট প্রক্রিয়ায় সহায়ক হবে।’
তিনি দেশে নারী ও শ্রমিকদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। শফিকুল আলম বলেন, অনেকে অভিযোগ করেন, নারী ও শ্রমিকদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নেই জুলাই সনদে। তবে এটি সঠিক নয়। রাজনৈতিক দলগুলো কি সব শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিত্ব করে না? সনদে সব বিষয়ই প্রতিফলিত আছে।
কর্মসংস্থান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গেও তিনি সতর্ক করে বলেন, আগামী সরকারের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এছাড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। সরকারকে এ বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।
প্রেস সচিব আরও জানান, রেল প্রকল্পে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ করা হয়েছে। দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে এসব প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উল্লেখ করেন, এই ধরনের বিনিয়োগ ও প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের জীবনমান উন্নয়ন করা সম্ভব, তবে আগামী সরকারের জন্য এগুলো বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
শফিকুল আলম রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সতর্ক করে বলেন, ক্ষমতাচ্যুত হাসিনার বিষয়ে সকলকে স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, জুলাইয়ের আন্দোলনকারী সবাইকে সন্ত্রাসী বলা হয়েছে। ১৮ কোটি মানুষকে সন্ত্রাসী হিসেবে দেখিয়ে ক্ষমতায় আসা সম্ভব নয়। দেশের মানুষকে হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে দমন করতে চাওয়া হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।
প্রেস সচিবের এই বক্তব্য নির্বাচনের প্রস্তুতি, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ সরকারের চ্যালেঞ্জকে সামনে তুলে ধরেছে। তিনি আশ্বস্ত করেছেন, প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সব ধরনের প্রস্তুতিতে সম্পৃক্ত আছেন, যাতে ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন