ঢাকা সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫

যেভাবে সরাসরি দেখবেন হাসিনার রায়

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২৫, ০৯:২৭ এএম
শেখ হাসিনা। ছবি- সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে। বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করবেন।

রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। পাশাপাশি ট্রাইব্যুনালের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজেও লাইভ দেখানো হবে। ঢাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় পর্দায় রায়প্রচারের ব্যবস্থা করেছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।

রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই সাক্ষ্য-প্রমাণে প্রমাণিত হয়েছে। প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না হলেও এই মামলায় অনুকম্পার সুযোগ নেই। দণ্ড হলে সাজা পরোয়ানা ইন্টারপোলে পাঠানো হবে।

গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, আমরা সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন করেছি। আদালত বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন, তবে রাষ্ট্রপক্ষের প্রার্থনা সর্বোচ্চ দণ্ড।

মামলা কীভাবে এগিয়েছে?

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠনের পর প্রথম মামলাটি ছিল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দাখিল করা এ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলা।

২০২৪ সালের ১৭ অক্টোবর এ মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। পরে ২০২৫ সালের ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে সহযোগী আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ছিল ৮,৭৪৭ পৃষ্ঠার; যেখানে দালিলিক প্রমাণ, জব্দ তালিকা, তথ্যসূত্র এবং শহীদদের তালিকার বিস্তারিত যুক্ত করা হয়।

পরবর্তীতে ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গ্রহণ করে ট্রাইব্যুনাল। ১০ জুলাই তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়।

একপর্যায়ে সাবেক আইজিপি মামুন দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন, যা ট্রাইব্যুনাল মঞ্জুর করে। তিনি আদালতে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

গত ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান সমাপনী যুক্তি উপস্থাপন করে শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সর্বোচ্চ দণ্ড চান। তবে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন দুই আসামির খালাস প্রার্থনা করেন।

যেসব অভিযোগে বিচার

১৪ জুলাইয়ের গণভবনের বক্তব্য ও গণহত্যা : আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ মন্তব্যের পর সরকারি বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীরা সমন্বিত হামলা চালিয়ে দেড় হাজারকে হত্যা, ২৫ হাজারকে আহত করার অভিযোগ।

ড্রোন, হেলিকপ্টার ও মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ : তৎকালীন আইজিপি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড পরিচালনার সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি অভিযোগ।

রংপুরে আবু সাঈদের হত্যা: ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা—তিন আসামিই অভিযুক্ত।

চানখাঁরপুলে ছয়জনকে হত্যা : নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ।

আশুলিয়ায় ছয়জনকে আগুনে পোড়ানোর ঘটনা : হত্যার ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে সরাসরি দায় আরোপ।