ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত আইইএলটিএস বা ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে হাজারো অভিবাসীকে ভুল ফলাফল দেওয়া হয়েছে, যার কারণে অকৃতকার্য অনেক পরীক্ষার্থীকে পাস দেখিয়ে যুক্তরাজ্যের ভিসা দেওয়া হয়েছে।
রোববার (০৭ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ-এর এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে আসে। এতে বলা হয়, বাধ্যতামূলক ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও ভুল মার্কিংয়ের কারণে হাজার হাজার অভিবাসীকে ভিসা দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত এই ভাষা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৮০ হাজার, যার অর্থ হলো, অনেকেই ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও তাদের পাস নম্বর দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চীন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামে আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসেরও প্রমাণ মিলেছে। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং অভিবাসী যারা ভিসার যোগ্য ছিলেন না, তারাও যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন। সেই সাথে, অনেক এনএইচএস কর্মী এবং ইংরেজিতে দুর্বল জ্ঞানসম্পন্ন অভিবাসীদের এমন পড়াশোনা বা কাজের জন্য ভিসা দেওয়া হয়েছে, যার জন্য তারা মোটেও উপযুক্ত নন।
এমন তথ্য সামনে আসার পর, কনজারভেটিভ পার্টি এসব অযোগ্য অভিবাসীদের চিহ্নিত করে নির্বাসিত করার দাবি জানাচ্ছে।
২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাজারো পরীক্ষার্থী এই পরীক্ষায় ভুল ফলাফল পেয়েছেন। আইইএলটিএস কর্তৃপক্ষ এর পেছনে প্রযুক্তিগত ত্রুটিকে দায়ী করেছেন। তারা বলছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির ফলে অল্প কিছু পরীক্ষার লিসেনিং এবং রিডিং পরীক্ষার ফলাফল কিছুটা প্রভাবিত হয়েছে। আর এই ত্রুটির ফলে মাত্র ১ শতাংশ পরীক্ষা প্রভাবিত হয়েছে বলে জানানো হয়। যদিও এই সংখ্যা প্রায় ৭৮ হাজার।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন মানুষ আন্তর্জাতিক ইংরেজি ভাষা পরীক্ষা ব্যবস্থা (আইইএলটিএস)-এর অধীনে পরীক্ষায় বসে, যা ব্রিটিশ কাউন্সিল, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট এবং শিক্ষা সংস্থা আইডিপি যৌথভাবে পরিচালনা করে।
দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, কিছুদিন আগে সমস্যাটি ধরতে সক্ষম হয়েছিল কর্তৃপক্ষ। পরে, গত মাসে পরীক্ষায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের সঠিক পরীক্ষার ফলাফল প্রদান করা হয়।
এর আগে, গত বছর বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ ইউনিয়নগুলো জানিয়েছিল, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের উচ্চ টিউশন ফি পাওয়ার লোভে বিদেশি শিক্ষার্থীদের দুর্বল ইংরেজি ভাষার দক্ষতা উপেক্ষা করে আসছে।
এ বিষয়ে চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলেছেন, যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা (এনএইচএস)-এর অনেক অভিবাসী কর্মীর ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা অনেক কম। ফলে রোগীর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ঝুঁকির মুখে পড়ছে। অপরদিকে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক অভিযোগ করেছেন, ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি শিক্ষার্থীর ইংরেজিতে অপর্যাপ্ত জ্ঞান রয়েছে।

