বাংলাদেশ সরকারি গাড়িচালক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব মো. হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। তিনি আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই গেজেট জারি হবে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকের পর হুমায়ুন কবীর জানান, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করতে চাইছিলাম, কিন্তু তিনি অফিসে না থাকায় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিস্তারিতভাবে পে-স্কেল বাস্তবায়নের বিষয়গুলো নিয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেছি এবং একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। কর্মকর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন যে এটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। পে-স্কেল বাস্তবায়ন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ইনশা’আল্লাহ, ডিসেম্বরের মধ্যেই নবম পে-স্কেলের গেজেট জারি হবে। পরবর্তীতে ফলো-আপ আলোচনাও হবে, যাতে কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়।’
দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে ছিলেন মুখ্য সমন্বয়ক মো. ওয়ারেছ আলী। অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন — সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান, সমন্বয়ক সালজার রহমান, মো. সেলিম মিয়া, রফিকুল আলম, খায়ের আহমেদ মজুমদার, মাহবুবুর রহমান তালুকদার, হুমায়ুন কবীর, আব্দুর রাজ্জাকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, তারা সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন যে, গেজেট ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রকাশ করা হোক।
নেতারা সতর্ক করে বলেছেন, ‘ডিসেম্বরের মধ্যে যদি গেজেট প্রকাশ না হয়, কর্মচারীরা আর শান্তভাবে বসে থাকবে না। পেটের ক্ষুধার কারণে তারা রাস্তায় নামবে। তাই সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।’
তথ্য অনুযায়ী, নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি অনেকদিন ধরেই বিভিন্ন সরকারি পেশাজীবী সংগঠন উপস্থাপন করে আসছে। এর আগে মোট ৯ দফা দাবি তুলে জানিয়েছিল গাড়িচালক সমিতি। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- বৈষম্যমুক্ত নবম জাতীয় পে-কমিশন গঠন।
- পে-কমিশনে বাংলাদেশ সরকারি গাড়িচালক সমিতির প্রতিনিধি থাকা।
- পে-স্কেলে প্রত্যাহারকৃত ভারী যানবাহন, টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল।
- সরকারি গাড়িচালক পদের বেতন ও জ্যেষ্ঠতা পুনর্বহাল।
- সরকারি গাড়িচালক পদকে কারিগরী পদ হিসেবে ঘোষণা।
- সরকারি গাড়িচালক পদটির নাম পরিবর্তন করে ‘মোটর ট্রান্সপোর্ট অপারেটর’ করা।
- পদোন্নতি যোগ্যতা অনুযায়ী প্রদান।
- ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন প্রক্রিয়া সহজ করা।
- সমিতির জন্য স্থায়ী কার্যালয় ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ভবন বরাদ্দ।
- ঝুঁকিভাতা ও রেশন সুবিধা চালু।
- আউটসোর্সিং প্রথা বাতিল করে স্থায়ী নিয়োগ।
নবম পে-স্কেলের বাস্তবায়ন কাজের ক্ষেত্রে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়াই মূল চ্যালেঞ্জ। সংগঠনের নেতারা আশাবাদী যে, এই পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে সরকারি গাড়িচালকদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে এবং কর্মচারী অঙ্গনে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
বৈঠকের শেষে নবম পে-স্কেল বাস্তবায়নের স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টার কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পরিচালক (প্রশাসন)-এর হাতে হস্তান্তর করা হয়। নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন, সরকার ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই গেজেট প্রকাশ করে ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে নবম পে-স্কেল কার্যকর করবে।



