অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন আগামী পাঁচ বছরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও গণভোটের ফল নির্ধারণ করবে দেশের আগামী শত বছরের পথচলা।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে দেশের সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সঙ্গে নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন পাঁচ বছরের জন্য, আর গণভোট শত বছরের জন্য। গণভোটের মাধ্যমে আমরা স্থায়ীভাবে বাংলাদেশকে পাল্টে দিতে পারি। যে নতুন বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাই, তার ভিত্তি এখান থেকেই তৈরি হবে।’
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই নির্বাচন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ। তাই নির্বাচনকে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও স্মরণীয় করে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ইউএনওদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, ‘ইতিহাস আমাদের নতুন সুযোগ দিয়েছে। আপনারা যদি দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন, সরকার তার দায়িত্ব সফলভাবে পালন করতে পারবে।’ সদ্য যোগ দেওয়া ইউএনওদের একটি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ দেন তিনি।
নির্বাচনকে অতীতের প্রতারণাপূর্ণ নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, সুস্থ মানুষ বলবে ওগুলো নির্বাচন নয়, প্রতারণা হয়েছে।’ এবারকার নির্বাচনকে তিনি একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব হিসেবে উল্লেখ করেন।
গণভোটে ভোটারদের সচেতন করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ভোটারদের বুঝিয়ে বলতে হবে হ্যাঁ দেবেন নাকি না দেবেন, মন ঠিক করে আসুন।’
ইউএনওদের সব পোলিং স্টেশন পরিদর্শন, স্থানীয় জনগণের সঙ্গে আলোচনা এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে যুক্ত করে একটি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেন তিনি। অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
নারী ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, নারীরা যেন নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারেন, তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম ও জনপ্রশাসন সচিব মো. এহছানুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনের তপশিল শিগগিরই ঘোষণা হবে, তাই ইউএনওদের এখন থেকেই দায়িত্ব বণ্টন, সময় ব্যবস্থাপনা এবং সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার আহ্বান জানান।
