দীর্ঘ জল্পনা ও আলোচনার অবসান ঘটিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা শুরু করেছেন। এ ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু হলো। দেশজুড়ে রাজনৈতিক দল, ভোটার ও সাধারণ মানুষ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় চূড়ান্তভাবে প্রবেশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন।
ভাষণে নির্বাচনের তারিখ, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন, যাচাই-বাছাই এবং প্রতীক বরাদ্দের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়। এই তপশিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
সিইসি ভাষণে জানান, চূড়ান্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬। এই দিনটি দেশের প্রায় ১৩ কোটি ভোটারের জন্য তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের দিন।
ঘোষিত তপশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনের পর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। প্রতীক বরাদ্দের পরই প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন এবং জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের ইশতেহার ও প্রতিশ্রুতি পৌঁছে দিতে পারবেন।
সিইসি আরও জানিয়েছেন, তপশিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচনি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করার প্রাথমিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে কমিশন প্রস্তুত থাকবে।
এ ছাড়া চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ও ভোটকেন্দ্রের তালিকা ইতোমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রায় ৪২,৭৬১টি ভোটকেন্দ্রে ভোটের সব ধরনের প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে, যাতে প্রায় ১২ কোটি ৭৬ লাখের বেশি ভোটার তাদের ভোটাধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে পারেন।
তপশিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে মাঠের রাজনীতিতে অংশ নেওয়া দলগুলো। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি, এনসিপি এবং অন্যান্য নিবন্ধিত দলগুলো পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ডের মাধ্যমে তাদের প্রতিশ্রুতি এবং নির্বাচনি ইশতেহার জনগণের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে।
এই তপশিল ঘোষণা দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভোটারদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে দেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন