এ কথা এখন সবার জানা- তামাক একটি মারাত্মক ক্ষতিকর পণ্য। তামাকের মধ্যে নানাবিধ ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। তামাককে বিড়ি-সিগারেট হিসেবে বা জর্দা-গুল যেভাবে যারা ব্যবহার করে থাকে তারা যে মারাত্মক রকমের ক্ষতির মুখে পড়ে সে বিষয়ে এই একবিংশ শতাব্দীতে কাউকে নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। এ নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব-সন্দেহের অবকাশ নেই। সরাসরি ধূমপান যেমন ক্ষতিকর, তেমনি একই রকমের ক্ষতিকর পরোক্ষ ধূমপান। পরোক্ষ ধূমপান হলো- বিড়ি, সিগারেটের ধোঁয়া বা তামাকের ক্ষতিকর উপাদান দেহে প্রবেশ করা।
রাজধানী ঢাকার মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকায় অবস্থিতি তামাক কোম্পানি বিএটি’র তামাক কারখানার কারণে অত্র এলাকার বাতাসে নিকোটিনসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান ছড়িয়ে পড়ছে প্রতিদিন। এতে ডিওএইচএস এলাকায় বসবাসকারী নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সী মানুষের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। অবিলম্বে মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকা থেকে বিএটি’র তামাক কারখানা অপসারণ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ১৪ মে বুধবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৬৫ সালে যখন ঢাকার মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায় ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) বাংলাদেশ-এর তামাক কারখানা স্থাপন করা হয়, তখন এটি একটি গ্রামীণ জনপদ ছিল। মূল শহরের অংশ ছিল না। দিন দিন মহাখালী ডিওএইচএস এলাকা ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক ও পর্যায়ক্রমে মিশ্র-আবাসিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। এখানে হাজার হাজার পরিবারে শিশু, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সি কয়েক লাখ মানুষ বসবাস করে।
এখানে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার শিশু লেখাপড়া করে। কিন্তু বিএটি’র তামাক কারখানা থেকে নির্গত তামাকের রাসায়নিকের কারণে বাতাস দূষিত হচ্ছে, শিশুদের শ্বাসকষ্টসহ নানা রকমের স্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তামাক পাতা আনা-নেওয়া এবং উৎপাদিত তামাক পণ্য সারাদেশে পরিবহনের কাজে বড় বড় ট্রাক-লরির আগমনে এ এলাকার সড়কের ওপর ব্যাপক চাপ পড়ে। আবাসিক এলাকার এ সড়কে এ ধরনের বড় বড় ট্রাক-লরি শিশুদের জন্য ভয়ের কারণ। যানজট, শব্দদূষণ ও বায়ুদূষণও সৃষ্টি করছে।
তামাক কারখানার মতো ক্ষতিকর একটি কারখানা কীভাবে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকায় এখনো কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তা নিয়ে রয়েছে বিরাট এক প্রশ্ন। কীভাবে এ কারখানা পরিবেশ ছাড়পত্র বা অন্যান্য অনুমতি পায় তা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। আমরা মনে করি, তামাক কোম্পানির প্রভাবে ২০২৩ সালে এসে ‘পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা’ সংশোধন করে তামাক সংশ্লিষ্ট শিল্প প্রতিষ্ঠানকে লাল শ্রেণির পরিবর্তে কমলা শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে এবং তামাক চাষে ২৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে শূন্য শতাংশ করা হয়েছে। তামাক কোম্পানি ও তাদের অনৈতিক কার্যক্রম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশ শহরের মাঝখান থেকে ক্ষতিকর তামাক কারখানাগুলো সরিয়ে সেখানে স্বাস্থ্যবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলছে। যেমন- তামাক কোম্পানির একচেটিয়া মালিকানাধীন ২০০ একর জমির একটি প্লট ব্যাংককে বেঞ্জাকিট্টি ফরেস্ট পার্ক করা হয়েছে, বর্তমানে যা একটি পাবলিক পার্কে রূপান্তরিত হয়েছে। ১৯২৭ সালে নির্মিত গ্রীসের এথেন্সের একটি তামাক কারখানা, ইরাকের কুর্দিস্তানের সুলায়মানিয়ার একটি তামাক কারখানা বর্তমানে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে রূপান্তর করা হয়েছে। মেলবোর্নের ৫.৩ হেক্টরের তামাক কারখানা ‘মরিস মুকে বর্তমানে ১০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক পার্কে রূপান্তর করা হয়েছে।
তামাকের ক্ষতির কথা বলে শেষ করা মুশকিল। মনে রাখা দরকার, বাংলাদেশে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু এবং ১৫ লাখের বেশি মানুষ ফুসফুস ক্যানসার, মুখের ক্যানসার, হৃদরোগ, স্ট্রোক, অ্যাজমা ইত্যাদি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান কারণ তামাক। উদ্বেগজনক তথ্য হচ্ছে, ঢাকার আশপাশে প্রাথমিক স্কুলে পড়া ৯২ ভাগ শিশুর মুখের লালায় উচ্চ মাত্রার নিকোটিন পাওয়া গেছে।
তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াজাতকরণও পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। তামাক শুকানোর জন্য প্রতি একর জমিতে প্রায় ৫ টন কাঠ প্রয়োজন হয়। এই কাঠ পেতে হলে দেশের বনভূমির প্রায় ৩০ ভাগ শতাংশ উজাড় করার প্রশ্ন রয়েছে। ২০২৪ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সিগারেটের ফেলে দেওয়া অবশিষ্টাংশ থেকে ৪ হাজার ১৩৯টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা সংগঠিত মোট অগ্নিকাণ্ডের ১৫.৫২ভাগ। অর্থাৎ বাংলাদেশের সাড়ে ১৫ শতাংশের বেশি অগ্নিকাণ্ডের জন্য সিগারেট বা ধূমপান দায়ী।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সরকারের কাছে অনতিবিলম্বে ঢাকা শহরের গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকা মহাখালীর ডিওএইচএস থেকে বিএটি’র তামাক কারখানা অপসারণ করার জোর দাবি জানিয়েছে। এ দাবির সঙ্গে একমত না হওয়ার কোনো কারণ দেখি না। একেবারে প্রকাশ্য ক্ষতির পরও সরকার কী করে এই কারখানা আবাসিক এলাকায় রাখার অনুমতি দিচ্ছে বা অনুমতি বহাল থাকবে তা বুঝে আসে না।
এ পর্যায়ে যদি আবাসিক এলাকায় পরোক্ষ ধূমপানের কারণে স্বাস্থ্যগত প্রভাব উল্লেখ করি তাহলে বিএটি কতটা ক্ষতি করছে তা আরও পরিষ্কার হবে। পরোক্ষ ধূমপান প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু- সবার জন্যই একটি গুরুতর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি, যা অসংখ্য স্বাস্থ্য সমস্যা এবং মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শিশুরা বিশেষ করে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, কানের সংক্রমণ, হাঁপানির আক্রমণ এবং হঠাৎ শিশু মৃত্যুর সিন্ড্রোমের ঝুঁকিতে থাকে। পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসা প্রাপ্তবয়স্কদের করোনারি হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। স্বাস্থ্যগত প্রভাবগুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
যেমন-
হৃদরোগ: প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যেসব ঝুঁকি রয়েছে তার মধ্যে সবার আগে বলতে হবে হৃদরোগের ঝুঁকি। পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে আসার ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক এমনকি হৃদরোগের ফলে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
ফুসফুসের ক্যানসার: ধূমপান না করা ব্যক্তিদের মধ্যে পরোক্ষ ধূমপান ফুসফুসের ক্যানসারের একটি মূল কারণ।
অন্যান্য ক্যানসার: কিছু গবেষণা বলছে যে, পরোক্ষ ধূমপানের ফলে স্তন ক্যানসার, নাকের সাইনাস ক্যাভিটি ক্যানসার এবং নাসোফ্যারিঞ্জিয়াল ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।
তাৎক্ষণিক প্রভাব: পরোক্ষ ধূমপানের সংস্পর্শে চোখ, নাক, গলা এবং ফুসফুসে তাৎক্ষণিক জ্বালা, সেই সঙ্গে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব এবং মাথা ঘোরা হতে পারে।
শিশুদের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ: বাচ্চারা ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া এবং সর্দি-কাশির মতো শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের জন্য বেশি সংবেদনশীল।
কানের সংক্রমণ: পরবর্তী ধূমপানের সংস্পর্শে কানের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে, বিশেষ করে শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে।
হাঁপানি: পরবর্তী ধূমপানের সংস্পর্শে আসা শিশুদের হাঁপানির আক্রমণ এবং লক্ষণগুলি আরও খারাপ করতে পারে।
আকস্মিক শিশু মৃত্যু সিন্ড্রোম (SIDS): পরবর্তী ধূমপানের সংস্পর্শে আসা শিশুদের SIDS-এর ঝুঁকি বেশি থাকে।
পরিবারের বাইরে পোষা প্রাণীর ওপর প্রভাব: কুকুর এবং বিড়ালের মতো প্রাণীরাও পরোক্ষ ধূমপানের মাধ্যমে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হয়, শ্বাসকষ্ট এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়।
দীর্ঘমেয়াদি পরিণতি: পরোক্ষ ধূমপানের দীর্ঘমেয়াদি সংস্পর্শে দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা এবং অকাল মৃত্যু হতে পারে।
অর্থনৈতিক প্রভাব: সরাসরি ধূমপান ও তামাকের ব্যবহারের বা পরোক্ষ ধূমপান আমাদের সমাজে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠেছে।
৩৮টি কাজ শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তার মধ্যে তামাক কারখানায় কাজ অন্যতম। জর্দা, গুল কারখানায় শিশু শ্রমিকের সংখ্যাই বেশি। তামাক কারখানায় কাজ করার সময় তাদের মুখে কোনো মাস্ক থাকে না। নারীরা শাড়ির আঁচল দিয়ে নাক ঢেকে রাখে। অথচ যে কারখানায় কাজ করে সেখানে তামাকের গন্ধে নিশ্বাস নেয়া যায় না।
বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজ বাড়িতেই পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। ২০২০ সালের এক জরিপ এই তথ্য দিচ্ছে। এরপরেও চলতি ২০২৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দৈনিক প্রথম আলোর তথ্য বলছে- এক বছরে ৪৩ হাজার কোটি টাকার সিগারেট বিক্রি করেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো-বিএটি। এ সংক্রান্ত দৈনিক প্রথম আলোর তথ্য বলছে- ২০২৪ সালের জন্য শেয়ারধারীদের ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটি গত বছরের জন্য সব মিলিয়ে ৩০০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর কোম্পানিটি ৪৩ হাজার ২৩২ কোটি টাকার সিগারেটসহ তামাকজাত পণ্য বিক্রি করেছে। আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে কোম্পানিটির এই বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে ২ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা বা ৭ শতাংশের বেশি। আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত ছয় বছরে কোম্পানির ব্যবসা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
কোম্পানিটির শেয়ারধারণ- সংক্রান্ত তথ্য অনুযায়ী, এর শেয়ারের প্রায় ৭৩ শতাংশই রয়েছে বিদেশি উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে। বাকি ২৭ শতাংশ শেয়ারের মধ্যে সরকারের হাতে রয়েছে ৯ শতাংশ, বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে সাড়ে ৪ শতাংশ, দেশীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে সাড়ে ৫ শতাংশ ও ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে বাকি ৮ শতাংশ শেয়ার। আর গত বছরের জন্য বিএটির পক্ষ থেকে ঘোষিত লভ্যাংশের মধ্যে বিদেশি উদ্যোক্তা-পরিচালকেরা পাবেন ১ হাজার ১৮২ কোটি টাকা। সরকার পাবে প্রায় ১৪৫ কোটি টাকা, বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পাবেন ৭৩ কোটি টাকা, এ দেশের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা পাবেন ৮৯ কোটি টাকাবং এ ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা পাবেন ১৩১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ‘ভয়েস অব ডিসকভারি’ মামলায় তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ, নতুন তামাক কোম্পানিকে লাইসেন্স না দেয়া এবং বিদ্যমান তামাক কোম্পানিগুলোকে এই ব্যবসা থেকে সরিয়ে আনার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে। অথচ সরকার তামাক পাতার রপ্তানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে শূন্য শতাংশে নামিয়ে এনেছে।
ফলে দেশে তামাক চাষ অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে খাদ্য সংকটকে আরও প্রকট করে তুলবে। সংবিধানে পরিবেশ সংরক্ষণ ও জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও, কিছু সরকারি সংস্থা সিগারেট কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে সংবিধানবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মহাখালী ডিওএইচএস ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশ্র আবাসিক এলাকা হওয়া সত্ত্বেও সেখানে অবস্থিত ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর কারখানা চালু থাকার মধ্যদিয়ে সংবিধান-বিরোধী পদক্ষেপের প্রমাণ পরিষ্কার হয়ে ওঠে। বিএটির কারখানা থেকে নির্গত তামাকের রাসায়নিক উপদান মিশে বাতাস দূষিত হচ্ছে এবং শিশুদের শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে- সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিচ্ছে না সরকারের কাছে।
মহাখালী ডিওএইচএস থেকে বিএটির কারখানা সরিয়ে নেওয়ার জন্য এরইমধ্যে নানা পর্যায় থেকে দাবি উঠেছে। দাবি উঠেছে- সেখানে বসবাসকারীর লোকজনের পক্ষ থেকে, দাবি উঠেছে পরিবেশ আন্দোলনের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া, ফেসবুকসহ নানা সামাজিক মাধ্যমে এ বিষয়ে জোরালো দাবি তোলা হয়েছে। কিন্তু কেন জানি সরকারের কোনো পর্যায় থেকে এ নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই। প্রতি বছর মোটা অংকের টাকা সরকারের পকেটে ঢুকছে সে জন্যই কী এই নীরবতা? যে কারণেই এই নীরবতা হোক না কেন তার অবসান হতেই হবে। মহাখালী ডিওএইএস থেকে বিএটির কারখানা সরাতে হবে। জনস্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এর বিকল্প নেই। যত গড়িমসি করা হবে- ক্ষতির মাত্রা ততই বাড়বে।
(লেখক: এশিয়ান টেলিভিশনের হেড অব নিউজ)