ঢাকা সোমবার, ০৫ মে, ২০২৫

জামায়াতের সংস্কারে অনড় ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ১০:৪৪ পিএম
ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি

আব্দুর রাজ্জাক। একজন বিজ্ঞ আইনজীবী। একজন রাজনীতিবিদও।

দীর্ঘদিন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দলটির ‘সংস্কারপন্থী’ নেতা হিসেবে পরিচিতি ছিল তার। দৃঢ় ও শক্ত মনোবলের কারণে তার অবস্থান থেকে পিছপা হোননি। যদিও শেষ পর্যন্ত দল থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন।

সেই ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আজ (৪ মে) মৃত্যুবরণ করেছেন। ১৯৪৪ সালে সিলেটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি।

আব্দুর রাজ্জাকের আরেক পরিচয় পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ট্রাইব্যুনালের মামলায় জামায়াত ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের আইনজীবী ছিলেন।

তিনি ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামি পক্ষের প্রধান কৌঁসুলি ছিলেন। 

টানা তিন দশক ধরে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিভাবে ভূমিকা ছিলেন। সর্বশেষ দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। 

এরমধ্যেই ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে চলে যান ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াত থেকে পদত্যাগ করেন।

ওই সময় ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের পদত্যাগ ও জামায়াতে ইসলামীতে সংস্কারের পক্ষে তার খোলামেলা বিবৃতি রাজনীতির ময়দানে বেশ আলোড়ন তৈরি করে।

তবে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার পরও কী কারণে পদত্যাগ করেছিলেন, তা বেশ কৌতুহলের জন্ম দেয়। যদিও  পত্যাগপত্রে সম্ভাব্য সব কারণ উল্লেখ করেছিলেন তিনি।

পদত্যাগ বার্তায় তিনি প্রথম থেকেই জামায়াত সংস্কারের চেষ্টা করে গেছেন বলে উল্লেখ করেছিলেন। দলটিকে বৈশ্বিক রাজনীতির বাস্তবতা আলোকে আনতে চেয়েছিলেন।

এ নিয়ে দলের আমিরের কাছে তিনি চিঠি দিয়েছিলেন বলে পদত্যাগ পত্রে উল্লেখ করা হয়। শেষমেষ তিনি তা করতে না পেরে হতাশ হয়ে পদত্যাগের পথ বেছে নিয়েছিলেন বলেও বার্তায় উল্লেখ করেন।

জামায়াতের রাজনীতি থেকে বিদায় নেয়ার পেছনে ব্যারিস্টার রাজ্জাক বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেন। ১৯৭১ সালের ভূমিকার জন্য দলটির ক্ষমা না চাওয়া, দলটির নাম পরিবর্তন না করার বিষয়ে শীর্ষ নেতাদের অনড় অবস্থান, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের সংস্কার করতে না পারাসহ বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করেন তিনি।

এ ছাড়া পদত্যাগ পত্রে আরও বেশকিছু কারণ উল্লেখ করেছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। যেখানে তিনি দলকে নিয়ে অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন। এককথায় তিন দশকে জামায়াতে ইসলামীর সংস্কার করতে চেয়েছিলেন আর এতে দৃঢ় ছিলেন, যার কারণেই তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

পরে সেই আক্ষেপেই ব্যারিস্টার রাজ্জাক আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) প্রধান উপদেষ্টা হন। তবে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর গত ১৭ আগস্ট সেই পদ থেকেও পদত্যাগ করেন তিনি।