লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দীর্ঘ চার মাস পর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় প্রবেশ করেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তবে হুইল চেয়ার নিয়ে চলাচল করা বিএনপি চেয়ারপারসন সবাইকে অনেকটা বিস্মিত করে দিয়ে বাসায় প্রবেশ করেন পায়ে হেঁটে ।
এ সময় দুই পুত্রবধূকে তাকে ধরে রাখতে দেখা যায়। খালেদা জিয়ার এই সুস্থতা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা বেশ উচ্ছ্বসিত হন। এর মাধ্যমে বিএনপির চেয়ারপারসন যে এখন অনেকটাই সুস্থ সেই বার্তাই পেলেন নেতাকর্মীরা।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যাওয়ার দিন খালেদা জিয়া পায়ে হেঁটেই গিয়েছিলেন। তবে ২০২০ সালের মার্চে যখন বের হন তখন হুইল চেয়ারে বের হয়েছিলেন। এরপর থেকে তার অবস্থার শুধু অবনতিই হয়েছে।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার রোষানলে পড়ে কারাগারে থাকা অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী । বেশ কয়েক বার জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চলে গিয়েছিলেন তিনি।
এমনকি কয়েক বার মৃত্যুর গুজবও ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। দেশে করোনা ভাইরাসে শুরুর প্রাক্কালে নির্বাহী আদেশে মুক্তি মিললেও ছিলেন নানা বিধি-নিষেধের মধ্যে বন্দি ছিলেন বাসার চার দেয়ালে ।
তবে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন ঘটলে মুক্তি মেলে খালেদা জিয়ার। মামলা থেকে খালাস পাওয়ায় পথ খুলে বিদেশে যাওয়ার। নানা জল্পনা-কল্পনার পর গত জানুয়ারির শুরুর দিকে তিনি লন্ডনে যান উন্নত চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসা শেষে চার মাস পর মঙ্গলবার ১০টা ৪০ মিনিটে দেশে পৌঁছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
ইমিগ্রেশন শেষ করে বিমানবন্দর থেকে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর বের হয়। এ সময় নেতাকর্মীরা পতাকা নেড়ে দলীয় প্রধানকে শুভেচ্ছা জানান। জনসমাগমের উপচেপড়া ভিড়ের কারণে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর এগিয়ে চলে ধীর গতিতে। দুপুর ১টা ২৫মিনিটে গাড়িবহর পৌঁছে যায় ফিরোজা’য়।
এদিকে প্রায় চার মাস পর প্রিয় নেত্রীকে অনেকটা সুস্থ অবস্থায় কাছে পেয়ে আনন্দের শেষ নেই বিএনপির নেতাকর্মীদের। লাখ লাখ নেতাকর্মী নেমে আসেন রাস্তায়। বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসা পর্যন্ত ঢল নামে মানুষের। ফলে বিমানবন্দর থেকে বাসায় ফিরতে তাঁর দুই ঘণ্টার বেশি সময় লেগে যায়।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যান বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কথা জেনে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছিলেন। সেটিতেই তিনি লন্ডনে যান। কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সেই আবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরলেন তিনি।