সংস্কারের প্রস্তাবগুলোর আইনগত ভিত্তি না থাকলে তা বাস্তবায়নযোগ্য হবে না। জনগণের কাছে এর কোনো মূল্য থাকবে না। তাতে জামায়াত সই করবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ২২তম দিনের সংলাপে সৈয়দ তাহের বলেন, ‘দীর্ঘ আলোচনায় যেসব সংস্কার প্রস্তাবে একমত হয়েছি, তা যদি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয় তাহলে বাংলাদেশে একটি গুণগত পরিবর্তন সম্ভব।
কিন্তু গতকাল কমিশনের পক্ষ থেকে যে সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে, তা দেখে খুব হতাশ হয়েছি। সেখানে বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে এসব সংস্কার বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু সরকারের মেয়াদ বা কমিশনের এখতিয়ার সম্পর্কিত কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়নি।’
জামায়াতের নায়েবে আমির আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এই সরকার কি তাহলে দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়? যদি বর্তমান সরকার না থেকে পরবর্তী সরকার এসব বাস্তবায়ন করে তাহলে এতদিন ধরে আমরা যে পরিশ্রম করেছি, তা কি কেবল পরামর্শ দেওয়ার জন্যই ছিল? তাহলে তো এর কোনো মূল্যই থাকল না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই ধরে নিয়েছিলাম, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রস্তাবিত সংস্কারগুলো আইনগত ভিত্তি পাবে এবং তা বাস্তবায়ন বাধ্যতামূলক হবে। কিন্তু যদি আইনগত ভিত্তি না থাকে তাহলে এটি কেবল কথার কথা থেকে যাবে, যা জনগণ মানবে না, গুরুত্ব দেবে না।’
ডা. তাহের বলেন, বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে এই ধরনের পরিস্থিতি বহুবার তৈরি হয়েছে এবং তখনও আইনি জটিলতা পেরিয়ে সমাধানের পথ বের করা হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, এরশাদসহ অনেক শাসক আইনগত প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় গিয়েছেন, সংসদ গঠন করেছেন, আইন পাশ করিয়েছেন। ফলে এবারও আইনি ভিত্তি দেওয়ার সুযোগ আছে।
আইনজ্ঞদের নিয়ে বৈঠকের প্রস্তাব করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, সেখানে আলোচনা হবে, কীভাবে সংস্কার প্রস্তাব আইনগত ভিত্তি পেতে পারে। এখনই সেই আলোচনার সুযোগ দিলে ভালো হয়।
ডা. তাহের বলেন, ‘জুলাই সনদ যদি বাস্তবায়নযোগ্য না হয়, আইনগত ভিত্তি না থাকে তাহলে তা শুধু একটি প্রতীকী দলিল হয়ে থাকবে। তাতে আমরা সই করব না, কারণ জনগণের কাছে যার কোনো বাস্তব মূল্য নেই, এমন প্রস্তাবে সই করে লাভ কী?’
আপনার মতামত লিখুন :