জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। নানা বাধা ও প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও দ্বিতীয় দিনের আয়োজনে ছিল দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়।
বুধবার (৬ আগস্ট) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, টিএসসি চত্বরে শিবিরের আয়োজন ঘিরে শিক্ষার্থী, দর্শনার্থী ও অনুসারীদের সরব উপস্থিতি। তথ্যচিত্র প্রদর্শনী থেকে শুরু করে সেমিনার ও আলোচনা পর্বে ছিল সক্রিয় অংশগ্রহণ।
তবে এ কর্মসূচিকে ঘিরে প্রথম দিনেই তৈরি হয় উত্তেজনা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জুলাই অভ্যুত্থানের প্রদর্শনীতে ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের ছবি প্রদর্শনের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রবল আপত্তির মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেই ছবি সরিয়ে নেয়।
পরে দ্বিতীয় দিনে আগের বিতর্কিত স্থানে স্থান পায় ভিন্নধর্মী উপস্থাপনা, যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বক্তব্য, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ে বিতর্কিত তথ্য, স্কাইপ কেলেঙ্কারি, মানবাধিকার আইনজীবী জিওফ্রে রবার্টসনের মন্তব্য এবং ভুয়া সাক্ষীদের সাক্ষ্যভিত্তিক উপস্থাপন তুলে ধরা হয়।

এ ছাড়া টিএসসি অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী বিশেষ সেমিনার আয়োজিত হয়। সেমিনারের তিনটি অধিবেশনে বক্তারা আলোচনা করেন, জুলাই অভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পলায়নের এক বছর: প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্ররাজনীতি ও ডাকসু নির্বাচন। নয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্তে ইসলাম প্রসঙ্গ। এ ছাড়া প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয় শহীদদের স্মরণে নির্মিত ডকুমেন্টারি ও প্রামাণ্যচিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনার্থী আহমাদুল্লাহ নোমান বলেন, ‘শিবিরের এই ব্যতিক্রমধর্মী কর্মসূচি আমাদের ফ্যাসিবাদের নির্মমতা ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের কথা মনে করিয়ে দেয়। আবরার ফাহাদ ও বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের তথ্যচিত্র আমার আবেগকে নাড়া দিয়েছে। এসব আয়োজন ইতিহাস সচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
শিবিরের এই আয়োজনে দর্শনার্থীদের আগ্রহ, প্রচার এবং অংশগ্রহণ দেখে বোঝা যায়, নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তারা জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন