ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোতে চলমান ছাত্র রাজনীতি নিয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।
শনিবার (৯ আগস্ট) সকালে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘ঢাবিতে যারা ছাত্রলীগ করত, তারা এখন কোথায়? রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন এবং ছাত্র রাজনীতির কাঠামোগত সংস্কারের দাবি না করে যারা শুধু অশোভন স্লোগান দিচ্ছে, তারা কি আদৌ সাধারণ শিক্ষার্থী?’
রাশেদ খান বলেন, ‘আমি নিজেও সাধারণ শিক্ষার্থী ছিলাম, তাদের আচরণ আমি ভালো বুঝি। এসব স্লোগান পরিকল্পিত উসকানি ছাড়া কিছু নয়। কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর মুখ থেকে এমন অশ্লীল কথা বের হওয়া সম্ভব নয়।’
অন্যদিকে, ঢাবির আবাসিক হলে বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলো ছাড়া অন্য সব দলের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে দরখাস্ত দিয়েছেন ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সদস্যসচিব উমামা ফাতেমা। শুক্রবার (৯ আগস্ট) কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর এ আবেদন করেন তিনি, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।
দরখাস্তে উমামা ফাতেমা উল্লেখ করেন, গত বছরের ১৭ জুলাই আমরা সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে প্রশাসন থেকে প্রতিশ্রুতি পেয়েছিলাম যে, কবি সুফিয়া কামাল হলে সব ধরনের ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে। তবে গত এক বছরে প্রশাসনের এই চুক্তি কার্যকর থাকলেও কিছু সংগঠন গোপনে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদলের সাত সদস্যবিশিষ্ট হল কমিটি ঘোষণা করায় এটি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।
উমামা বলেন, ‘আমরা মনে করি, এসব কর্মকাণ্ড সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।’
দরখাস্তে চারটি সংগঠনের নাম উল্লেখ করে তাদের কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে, তবে বামপন্থি সংগঠনগুলো সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি উমামা, যদিও সেসব সংগঠনের শিক্ষার্থীরাও হলে অবস্থান করছেন এবং তাদের কমিটিও রয়েছে।
এর আগে উমামা ফাতেমা এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সেটি দ্রুত স্থগিত করার আলটিমেটাম দেন।
এদিকে, ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে ঢাবির হলগুলো বিক্ষোভে উত্তাল হয়। রোববার রাত সাড়ে ১২টায় রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভেঙে বিক্ষোভ বের করে এবং দ্রুত সব হলে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে জড়ো হন।
ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্র রাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। একই সঙ্গে হল পর্যায়ে ছাত্র রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’
আপনার মতামত লিখুন :