ঢাকা মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট, ২০২৫

‘জুলাই আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে যারা থাকবে না, তাদের প্রত্যাখ্যান করবে জনগণ’ 

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২৫, ১১:৫৯ পিএম
নুরুল হক নুর। ফাইল ছবি

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘যেসব দল নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চায় না, তারা আসলে সংস্কারও চায় না। জুলাই আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে যারা থাকবে না, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করবে। এ আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে নয়, ছাত্র-জনতার হাত ধরেই সফল হয়েছে।’

সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহীতে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে ২০২৪ সালের রাষ্ট্র সংস্কারের স্মৃতিচারণ এবং গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় নতুন বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানিয়ে গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি রাজশাহীতে প্রথমবারের মতো সমাবেশে যোগ দেন। 

নুরুল হক নুর বলেন, ‘২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে যে স্বপ্ন নিয়ে জুলাই আন্দোলন হয়েছিল, তার এক বছর পেরিয়ে গেলেও জনগণের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। বরং আমরা আবারও পুরনো ফ্যাসিবাদী রূপ দেখছি। পুরনো মডেলের রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। এটি কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে হয়নি।’

তিনি স্মরণ করেন, ‘যেদিন দেশের প্রধানমন্ত্রীর গাড়ির লাইসেন্স দেখতে চেয়েছিল ছাত্ররা, সেদিন থেকেই স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রকৃত আন্দোলন শুরু হয়েছিল।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘জরিপে দেখা যাচ্ছে, ১২ শতাংশ মানুষ বিএনপিকে, ১০ শতাংশ জামায়াতকে ভোট দিতে চায় এবং ১৪ শতাংশ কাউকে ভোট দিতে চায় না। তাহলে বাকি ভোট কারা পাবে? যারা জনগণের পাশে থাকবে, তারাই পাবে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা যদি পুরনো রাজনীতির বিরুদ্ধে নতুন রাজনীতির বিকল্প তুলে ধরতে পারেন, মানুষকে বোঝাতে পারেন—তাহলে আমরা ভোট পাব। ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা যেমন টিটকারির জবাব দিয়ে আমাকে ভিপি নির্বাচিত করেছিল, এবারও জনগণ তেমন জবাব দেবে।’

তরুণদের ভূমিকা নিয়ে নুর বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ পরিবর্তনে তরুণরাই মূল শক্তি। তাদের ওপর ভরসা রাখলে দেশ পথ হারাবে না। সমাবেশে লোকসংখ্যা দিয়ে মূল্যায়ন করা উচিত নয়, কারণ সমাবেশ দিয়ে সরকার গঠন হয় না।’

‘বাপ-বেটির শাসন’ প্রসঙ্গে নুর বলেন, ‘দেশের মানুষ শেখ মুজিবুর রহমানকে দেবতা ভেবে সব দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু তিনি তার মর্যাদা রাখতে পারেননি। মুজিব কী করেছিলেন, তা দেশের মানুষ জানে—নায়ক থেকে ভিলেন বনে গিয়েছিলেন। তার মেয়ে শেখ হাসিনা ১৬ বছরে যা করেছেন, তার ফল তিনি পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী হয়েও পায়ে জুতা পরার সময় পাননি পালানোর আগে। বাপ-বেটি দুজনই জনগণের কাছ থেকে প্রাপ্য জবাব পেয়েছে।’

পিআর পদ্ধতির পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, ‘নিম্নকক্ষে না হলেও অন্তত উচ্চকক্ষে এই নির্বাচন পদ্ধতির বাস্তবায়ন জরুরি এবং আসন্ন নির্বাচনেই তা হওয়া উচিত। এতে ছোট-বড় সব দল সংসদে প্রতিনিধিত্ব পাবে। এটা একটি ইতিবাচক পদ্ধতি; যারা চায় না, তারা আসলে সংস্কার চায় না।’

গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণ অধিকার পরিষদ রাজশাহীর আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ইকবাল বাদল। প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মীর মোহাম্মদ শাজাহান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলা সভাপতি আজিজুর রহমান বাচ্চু, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সুমন কবির, গণ অধিকার পরিষদ ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কেন্দ্রীয়, জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দ।