ঢাকা বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

‘ছাত্রদের মুরুব্বি-কর্তৃপক্ষ বানানোর দায় কিছুটা প্রধান উপদেষ্টার নেওয়া উচিত’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২৫, ০৪:৪৮ পিএম
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। ছবি- সংগৃহীত

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য ছাত্রদের ‘কর্তৃত্ববান’ করে তোলার দায় প্রধান উপদেষ্টাকেও নিতে হবে। তিনি অভিযোগ করেছেন, ছাত্রদের মুরুব্বি বানিয়ে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের আকম খাঁ হলে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‌‘আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে ছাত্রদের প্রতিনিধি বসিয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাত্র প্রতিনিধি পুলিশকে ব্যবহার করে গুলশানের একটি বাড়ি থেকে চাঁদার ৫০ লাখ টাকার মধ্যে ১০ লাখ নিয়ে আসে। যখন আরও ৪০ লাখ আনতে যায় তখন ধরা পড়ে। এই ঘটনা কি আপনি জানেন না? পুলিশ ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে ছাত্রদের দিয়ে চাঁদাবাজি করানো হচ্ছে। শিক্ষাব্যবস্থা, প্রশাসন সবকিছু বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর দায় তো আপনাকে নিতেই হবে।’

শিক্ষা ও ছাত্ররাজনীতির অবক্ষয়ের জন্য সরকারকে দায়ী করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ছাত্রদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশ তুলে দেওয়ার মানে হলো ভবিষ্যৎ ধ্বংসের পথে ঠেলে দেওয়া। আজ তারা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করছে, চাঁদাবাজি করছে, আবার ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। এই পরিস্থিতি গণতান্ত্রিক সমাজে কখনোই কাম্য নয়।’

আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দুদু বলেন, নির্বাচন কবে হবে এই প্রশ্ন যতদিন জনগণের মনে থাকবে ততদিন দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র নেই। স্বৈরতন্ত্রের পতন তখনই সার্থক হবে, যখন গণতন্ত্রের উত্তরণ নিশ্চিত হবে। যারা নানা অজুহাতে এই উত্তরণ বাধাগ্রস্ত করছেন তারাই প্রকৃতপক্ষে স্বৈরতন্ত্রের পক্ষেই অবস্থান নিচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আজ যারা বিএনপির আন্দোলনের মূল্য বোঝে না তারা হয়তো জানেই না, বিএনপির আন্দোলনের শুরুতে তাদের বয়স কত ছিল। এখন যারা ২৬ বা ২৮ বছর বয়সি, সেই সময় তারা শিশু ছিল। হয়তো তাদের মায়েরা ভাত খাইয়ে দিত। অথচ তারা আজ ইতিহাস অস্বীকার করছে, তারা অহংকারে অন্ধ হয়ে গেছে।’

ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) এখনো সময় পেয়েছেন। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যেই একটি অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করুন। তা না হলে গণবিস্ফোরণ অনিবার্য হয়ে উঠবে। ইতিহাস বলছে, ভালো নির্বাচন ছাড়া কোনো স্বৈরতান্ত্রিক সরকার দীর্ঘদিন টিকতে পারেনি। জাতি এখনো আশাবাদী আপনি ভালো নির্বাচন উপহার দেবেন।’

তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা এখন চাঁদাবাজি করছেন, বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন তাদের বলব, ‘এখনো সময় আছে। সময়ের ব্যবধানে যারা আপনাদের ব্যবহার করছে, তারাই এক সময় আপনাদের ত্যাগ করবে। তখন আর ফিরে দাঁড়ানোর সময় থাকবে না।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মুক্তার আকন্দের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম কায়সার লিংকন, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির প্রমুখ।