আওয়ামী লীগ আমলের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও সংস্কার সম্পন্ন হওয়ার আগে কোনো নির্বাচন হলে তা দেশের জন্য আরেকটি বড় জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে দাঁড়াতে পারে বলে সতর্ক করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকার এক হোটেলে জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন’ বিষয়ক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত আমির বলেন, ‘‘আমাদের শহীদরা এবং বেঁচে থাকা ‘শহীদ’রা আমাদের সম্পদ, তারা আমাদের বোঝা নয়। তাদের সম্মান দিতে হবে কেবল কথায় নয়, বাস্তব কাজে।’’
সরকার এবং জাতিকে এই স্বীকৃতি প্রদানের জন্য তিনটি পদক্ষেপ একযোগে এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শফিকুর রহমান বলেন, ‘বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন একসাথে সমান্তরালে চলতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু বিচার ও সংস্কারের আগে যদি নির্বাচন হয় তাহলে সেটি একটি নতুন জাতীয় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে, এটাই আমাদের বিশ্বাস।’
গত ২৬ জুলাই চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ পরিবারের আয়োজনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা বিচার না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন দেখতে চাইছেন না বলে উল্লেখ করে জামায়াত আমির বলেন, ‘আন্দোলন দমন করতে গিয়ে শত শত মানুষ নিহত ও হাজারো মানুষ পঙ্গু হয়েছে। এসব ঘটনার পূর্ণ বিচার নির্বাচনের আগে সম্ভব না হলেও জঘন্য অপরাধীদের অন্তত কিছু বিচার দেখতে চাই।’
জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধান মিশনের প্রতিবেদন এবং অপূরণীয় তথ্যগুলো একত্রিত করে সঠিক বিচার নিশ্চিত করার তাগিদ দেন তিনি। তবে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক হত্যা বা বিচারিক হত্যার কোনো বিচার না দেখতে চাওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘বিচার যেন শতভাগ স্বচ্ছ এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে হয়। আমি বিশ্বাস করি, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হলে অপরাধীরা পার পাবে না এবং বিচারবিহীনতা ও বিচার ধামাচাপা দেওয়ার সংস্কৃতি দূর হবে।’
দলের পক্ষ থেকে বিচার প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। তিনি জানান, জনগণের ভোটে সরকার গঠন বা বিরোধী দল হওয়া সব ক্ষেত্রে বিএনপির ভূমিকা হবে ন্যায়সংগত ও অকুতোভয়।
জামায়াত আমির বিচার বিভাগের স্বাধীনতার বাস্তবতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের বিচার বিভাগ স্বাধীন বলে শুনতে শুনতে আমার কান দুটো প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর অবসান ঘটিয়ে বিচার বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে, যাতে আমরা ন্যায্য বিচার পেতে পারি।’