জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান এবং লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করার মাধ্যমে আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাড্ডা থানা জামায়াত আয়োজিত জুলাই জাতীয় সনদ কার্যকরকরণ, সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু, লেভেল প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের গণহত্যা ও দূর্নীতি বিচারের দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশ ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেলিম উদ্দিন বলেন, জুলাই বিপ্লব দেশের জন্য নতুন সম্ভবনার দিশা দেখালেও মহল বিশেষের ক্ষমতালিপ্সা ও অহংকারের কারণে তা কার্যকর হচ্ছে না। তাদের আচরণ দেশকে চাঁদাবাজ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছে। তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনীতি ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা না করে হুমকি-ধামকি দিয়ে ভয় সৃষ্টি করছে। এই পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনে সবার জন্য লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি না দিলে তা ‘কিতাবে আছে; গোয়ালে নেই’ অবস্থায় সীমাবদ্ধ থাকবে। এতে জুলাই বিপ্লবের কার্যকারিতা থাকবে না এবং স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ মাথাচাঁরা দেবে। তাই সনদকে অবিলম্বে সাংবিধানিক ভিত্তি দিয়ে কার্যকর করতে হবে।
সেলিম উদ্দিন উল্লেখ করেন, পতিত স্বৈরাচার দেশের গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করেছে। সুশাসন ও নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কার করা অপরিহার্য। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, জাতীয় পার্টি সহ স্বৈরাচারের সকল দোসরদের রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধ করতে হবে। ভোটের মূল্যায়ন ও গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন জরুরি। পাশাপাশি জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার না হলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।
তিনি জানান, জামায়াত ৫ দফা দাবির মাধ্যমে দেশের সুশাসন ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছে। তিনি জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদে এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা উচিত।
অনুষ্ঠানটি বাড্ডা উত্তর থানা জামায়াতের আমীর মাওলানা কুতুব উদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং বাড্ডা পশ্চিম থানা আমীর আব্দুস সবুর ফরহাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট আতিকুর রহমান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, এবং উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনের থানা আমীর ও সেক্রেটারিবৃন্দ। সমাবেশ শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যার আয়োজন করা হয়।