আবারও গোপালগঞ্জে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রতিটি গ্রাম-উপজেলায় কর্মসূচি করব। প্রতিটি ঘরে ঘরে উড়বে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে নাহিদ ইসলাম বলেন, গোপালগঞ্জ নিয়ে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। বাংলাদেশের প্রতি আমাদের যে রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা, গোপালগঞ্জের প্রতিও সেটি প্রযোজ্য। আমরা গোপালগঞ্জের জনগণের ওপর রাজনৈতিক বৈষম্যের বিরোধিতা করি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষকে বিপন্ন করেছে। মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে অবিচার করেছে। আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।
নাহিদের ভাষ্য অনুযায়ী, এনসিপির গোপালগঞ্জে কর্মসূচি ছিল পূর্বঘোষিত ও শান্তিপূর্ণ। আমরা কোনো সংঘাতের জন্য যাইনি। কিন্তু পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে, ঠিক যেভাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হয়েছিল।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় দেশে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। জুলাই গণহত্যার বিচার আমরা বহুবার দাবি করেছি, কিন্তু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
নাহিদ ইসলাম আরও অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে হামলায় অংশ নিলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। অনেকে গ্রেপ্তার হলেও জামিনে মুক্তি পাচ্ছে বা পালিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, তারা সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে এত রক্তপাত হতো না। সরকার ও প্রশাসনকেই এ দায় নিতে হবে।
তিনি বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গতকাল গোপালগঞ্জে অবস্থান করছিল। আমরা পথসভা করলেও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের সমর্থকদের বাধা দেওয়া হয়েছে। পথে সশস্ত্র হামলার মুখেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করেছি।
ফেসবুক পোস্টে চারজন এনসিপি কর্মীর মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করি না। সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, আমরা শহীদদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি, গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে মুজিববাদ দাঁড়াতে পারবে না। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের নয়, এটি হবে বাংলাদেশপন্থীদের।
তিনি শহীদ বাবু মোল্লা ও শহীদ রথীন বিশ্বাসের নাম উল্লেখ করে বলেন, মকসুদপুর ও কোটালীপাড়ায় শহীদদের কবর রয়েছে। এই মাটি মুজিববাদীদের হতে দেব না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও মুজিববাদীদের হাতে যাবে না ইনশাআল্লাহ।
শেষে তিনি সবাইকে ফরিদপুরের পদযাত্রায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান এবং গতকালের হামলার প্রতিবাদে যারা রাস্তায় নেমেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
