শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল সংস্কার ছাড়া রাষ্ট্রের মৌলিক পরিবর্তন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা যদি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে না পারি, তাহলে রাষ্ট্রের আমূল পরিবর্তন কখনোই সম্ভব নয়।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে বাংলা একাডেমিতে ইউনিভার্সিটি টিচার্স ফোরামের (ইউটিএফ) আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষকদের ভূমিকার প্রশংসা করে নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শিক্ষক সমাজ সব সময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। জুলাই আন্দোলনেও শিক্ষকেরা সাহসিকতার সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
তিনি আরও বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে দলীয় বিবেচনায় শিক্ষকদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এটি ছিল এক ধরনের ফ্যাসিবাদী কাঠামো, যা এখনো সমাজে রয়ে গেছে। ব্যক্তির মানসিকতা ও সমাজের চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন না আনলে এই ফ্যাসিবাদ কখনোই নির্মূল হবে না।
বেকারত্ব সমস্যার সমাধান প্রসঙ্গে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, যদি আমরা কর্মসংস্থান বাড়াতে চাই, তবে প্রথমেই শিক্ষা খাতে সংস্কার আনতে হবে। শিক্ষা এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তরুণরা শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে কর্মমুখী দক্ষতা অর্জন করতে পারে। শিক্ষা ও কর্মসংস্থান- এই দুই ক্ষেত্র একসঙ্গে এগিয়ে নিতে পারলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।
নাহিদ ইসলাম সরকারের সমালোচনা করে বলেন, সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার মৌলিক পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। তারা ব্যর্থ হলেও আমরা ব্যর্থ হব না। শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।
তিনি আরও বলেন, “জুলাই সনদের যে পথে আমরা এগোচ্ছি, সেটিই এখন জাতির প্রত্যাশা। এই সনদের বাস্তবায়ন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দিতে হবে। সনদে কোনো ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্ট থাকবে না। আমরা আশা করি, খুব দ্রুত জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ একটি নতুন দিগন্তে পৌঁছাবে।”
অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা উপস্থিত ছিলেন। তারা শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কার এবং নতুন প্রজন্মের জন্য আধুনিক, মুক্তচিন্তাসম্পন্ন শিক্ষার পরিবেশ তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন।

