ঢাকা রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫

জার্মানিতে জুলাই বিপ্লবের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে মতবিনিময়

জার্মানি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৩:০৮ পিএম
‘জুলাই বিপ্লব’-এর চাওয়া-প্রাপ্তি নিয়ে মতবিনিময় সভা। ছবি- সংগৃহীত

জার্মানির রাজধানী বার্লিনের পাংকো এলাকায় ‘জুলাই বিপ্লব’-এর চাওয়া ও সম্ভাব্য প্রাপ্তি নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছেন বার্লিনে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা। শুক্রবার (২৭ জুন) সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি লাইব্রেরিতে আয়োজিত এ সভায় প্রবাসীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নাগরিক কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোশাহিদা সুলতানা ঋতু, লেখক ও গবেষক কল্লোল মোস্তফা, এবং অর্থনীতিবিদ সুজিত চৌধুরী।

বক্তারা গেল বছরের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পটভূমি ও শেখ হাসিনা সরকারের পতন বাংলাদেশ ও গণমানুষের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করেন।

এ সময় জুলাই পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সফলতা ও ব্যর্থতা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশের সাধারণ জনগণ সে অভ্যুত্থানের সুফল এখনো পায়নি, সবকিছু ছাপিয়ে রাষ্ট্রের সকল কিছুতে নব্য ফ্যাসিবাদী আর মব এর রাজত্ব কায়েম করেছে এক শ্রেণীর নব্য স্বৈরশক্তি।

সমাজের সকল স্তরে বৈষম্য দূর করাতো দূরে থাক প্রত্যাশিত সাম্য, ন্যায় বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি। প্রবাসীদের নানা প্রশ্নের উত্তরে বক্তারা বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের আমূল পরিবর্তনের অংশ হিসেবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও সংবিধান সংস্কার কমিশনসহ মোট ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করা হলেও দৃশ্যমান অগ্রগতি সময়সাপেক্ষ বিষয়।

তবে জুলাই পরবর্তী সময়ে নারী, স্বাস্থ্য খাত, নানা লিংঙ্গের মানুষ, প্রান্তিক কৃষক, শিক্ষা, অর্থনীতি, মুক্তিযুদ্ধ ও নানা মত, পথ ও ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর যেভাবে মব সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে তা অত্যান্ত হতাশার ও আশংকার। অন্তর্বর্তী সরকার পুরোনো পরিকল্পনা অব্যাহত রেখেছে এবং নতুন কোনো টেকসই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ করেনি। বন্ধ চিনিকল ও পাটকলগুলো পুনরায় চালুর কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন জার্মানি সফররত বক্তারা।

 সবশেষে অভ্যুত্থানের প্রত্যাশা পূরণে ও রাষ্ট্র এবং সমাজ বিনির্মানে সমাজের সকল স্তরের সব শ্রেণীর পেশার নাগরিকদের পাশাপাশি প্রবাসীদেরও দায়িত্বশীল ইতিবাচক ভূমিকা রাখার আহবান জানান অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। সভায় সর্বস্তরের প্রবাসীরা অংশগ্রহণ করেন।

সফরে ৩০জুন জার্মানির মানহাইমে হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হাসিনা পরবর্তী বর্তমান বাংলাদেশ’ ও ১২ জুলাই বন্দরনগরী হামবুর্গের উন্নয়ন ফোরাম বাংলাদেশ এর আয়োজনে আরো দুটো সেমিনারে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে আমন্ত্রিত হয়ে আসা অতিথিদের।