রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম

বউ-শাশুড়ি দ্বন্দ্ব: শান্তি ফেরাতে যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম

শায়খ আহমাদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

শায়খ আহমাদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে কমবেশি অনেক পরিবারেই দেখা যাচ্ছে বউ ও শাশুড়ির মধ্যে কলহ। একে ঘিরে তৈরি হচ্ছে দাম্পত্য কলহ, পারিবারিক অশান্তি আর অনেক ক্ষেত্রেই ঘটছে আত্মহননের মতো হৃদয়বিদারক ঘটনা। বউ-শাশুড়ির দ্বন্দ্বে শান্তি ফেরাতে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত মতামত এবং বাস্তবভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন জনপ্রিয় ইসলামি চিন্তাবিদ ও বক্তা শায়খ আহমাদুল্লাহ।

সম্প্রতি এক প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, ‘বেশির ভাগ পরিবারেই দাম্পত্য কলহ মূলত বউ-শাশুড়িকে ঘিরেই শুরু হয়। এর ফলে কত ছেলে যে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।’

তিনি বলেন, ‘বউ-শাশুড়ির মাঝে যে কলহ, এই কলহ দূর করার উপায় হলো প্রত্যেক মানুষের দায়িত্ব ও অধিকারের সীমারেখা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো। আলাপচারিতা বৃদ্ধি করতে হবে, জানাশোনা বাড়াতে হবে।’

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক মা তাদের সন্তানকে অতিমাত্রায় ভালোবাসেন। তবে এই ভালোবাসা যখন সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন তা সন্তান-সংসারে হস্তক্ষেপে রূপ নেয়। বিয়ের পর ছেলে যখন স্ত্রী নিয়ে সংসার শুরু করে, তখন অনেক মা প্রত্যেক বিষয়ে নিজে জানার ও বলার অধিকার দাবি করেন। এটা অনেক ক্ষেত্রেই বাড়াবাড়ি। সন্তান যখন বড় হয়, তখন তার নিজস্ব মতামত তৈরি হয়। বিয়ের পর সেই মতামতের সঙ্গে স্ত্রীর মতামতও যুক্ত হয়। এখানে মায়েরা গাইড করবেন, পরামর্শ দেবেন, কিন্তু একক নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা উচিত নয়।’

তিনি বলেন, ‘ছেলে উপার্জন করার পর তার উপার্জনের নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে? মা চান তিনিই নিয়ন্ত্রণ করবেন, স্ত্রীও চান তিনিই নিয়ন্ত্রণ করবেন। অথচ ইসলাম বলে, যিনি উপার্জন করেন, তিনিই সেই অর্থের মালিক এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তারই। মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে, তার পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে, তবে সিদ্ধান্তের ক্ষমতা উপার্জনকারীর।’

শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, ‘অনেক মা-বাবা প্রবাসী ছেলেদের উপার্জনের পুরো টাকাই নিজেদের হাতে রাখতে চান। এটাও বাড়াবাড়ি। সন্তানদের প্রতি যদি বাবা-মা অন্যায় করেন, তাহলে সেজন্য তাদের আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমাদের সমাজে অধিকাংশ কলহের মূলে এই সীমারেখার অভাব। মা-বাবার অধিকার সবচেয়ে বেশি, আল্লাহ ও রাসূলের পরই তারা। কিন্তু সেই অধিকারও শরিয়তের নির্ধারিত সীমার মধ্যে। সুতরাং সেই সীমা মেনে চলা সবার জন্য জরুরি।’

স্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আপনার স্বামী উপার্জন করে আনছেন, এখন আপনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবেন, সেটা যৌক্তিক নয়। আপনি আপনার প্রাপ্য ভরণপোষণ পাচ্ছেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়। এরপর যিনি উপার্জন করছেন, তিনি তার অর্থ যেভাবে ইচ্ছা খরচ করবেন।’

তিনি স্ত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনার স্বামী যদি ভুল পথে থাকেন, তাহলে চোখের পানি ফেলে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। ঝগড়া করে কিংবা মনোমালিন্য তৈরি করে কোনো সমাধান হয় না। নিজের অধিকার জানা ও সীমার মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি বলেন, ‘এই দুনিয়ায় আমাদের সব চাওয়া পূরণ হবে না। ঈমানদারদের জন্য এটা গ্রহণযোগ্য চিন্তা নয় যে, মনমতো না হলেই হতাশায় ডুবে যাব। আমাদের সহনশীল ও ধৈর্যশীল হতে হবে। তবেই ইনশাল্লাহ পারিবারিক কলহ কমবে।’

পরিশেষে, শায়খ আহমাদুল্লাহর পরিষ্কার বার্তা- প্রত্যেকের সীমা ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা এবং পারস্পরিক সম্মান বজায় রাখলেই পরিবারে ফিরে আসবে শান্তি। সমাজে সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য এটি এখন সময়ের দাবি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!