আজ দশমীতে দেবী দুর্গা মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে ফিরবেন দোলায় চড়ে। প্রতিমা বিসর্জনের আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গাপূজা। মন্দিরে মণ্ডপে বেজে উঠেছে বিদায়ের সুর।শেষ হবে আজ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
মহা ধুমধামে অঞ্জলি, আরতি, পূজা–অর্চনার মধ্য দিয়ে পালিত হয় বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের এই প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সকালে শুরু হবে দেবীর দশমী বিহিত পূজা। এরপর দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী উৎসবের সমাপ্তি হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের অসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এসব প্রবৃত্তি বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
দেবী দুর্গার বিদায়ের আগে মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠবেন নারীরা। দেবীর চরণের সিঁদুর নিয়ে নিজেদের রাঙিয়ে তুলবেন তারা। শাস্ত্রমতে, স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন নারীরা দেবী দুর্গার সিঁথিতে দেওয়া সিঁদুর নিজের সিঁথিতে লাগিয়ে আশীর্বাদ নেন। পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গা মাকে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর একে অপরকে সিঁদুর লাগিয়ে দেন তারা। সিঁদুর খেলা শেষে শেষবারের মতো দেবীর আরাধনা করেন তারা।
সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, বনানী মণ্ডপ, ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মণ্ডপে সিঁদুরখেলার আয়োজন থাকবে বলে এসব মণ্ডপের পূজা আয়োজকেরা জানিয়েছেন।
বিজয়া দশমীতে সারাদেশে স্থানীয় আয়োজন ও সুবিধামতো সময়ে শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ জানিয়েছে, রাজধানীতে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দশমীর পূজা শুরু হবে ৯টা ৫৭ মিনিটে। দর্পণ বিসর্জনের পরে ১২টায় শুরু হবে স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচি। প্রতিবছরই বিজয়ার দিনে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে স্বেচ্ছা রক্তদানের আয়োজন থাকে।
বিজয়ার শোভাযাত্রা শুরু হবে বিকাল ৪টায়। তার আগে মহানগরীর অনেক স্থানের মণ্ডপ থেকে অধিকাংশ প্রতিমা এসে জমা হবে পলাশী মোড়ে। সদরঘাটের ওয়াইজঘাটের বুড়িগঙ্গা নদীর বিসর্জন ঘাটে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে সন্ধ্যা নাগাদ।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, দুর্গা মায়ের বিদায়ের ঘণ্টা বেজে গেছে। কৈলাশে ফিরে যাবেন মা দুর্গা। আবার আমাদের অপেক্ষা শুরু হবে আগামী বছরের পূজার জন্য। এবারের পূজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা নিরাপদে পূজা উদযাপন করতে পেরেছেন। এজন্য আমরা সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন