গাজার কাছে বেসামরিক সুমুদ ফ্লোটিলা যেতে পারলে শক্তিশালী নৌবাহিনীগুলো কেন পারে না এমন প্রশ্ন তুলেছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড বিষয়ক বিশেষ দূত ফ্রান্সেস্কা আলবানিজ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে আলবানিজ বলেন, বিশ্বের সাধারণ নাগরিকরা ছোট ও সীমিত সামর্থ্যের নৌযানে করে গাজা উপকূল থেকে মাত্র ৬০ নটিক্যাল মাইল (১১১ কিমি) দূরত্ব পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছে। তাহলে আধুনিক ও সুসজ্জিত নৌবহর থাকা রাষ্ট্রগুলো কেন সহজেই ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙতে পারছে না?
গাজামুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা অভিযানে সমর্থন জানিয়ে আলবানিজ লিখেছেন, ‘চলো ফ্লোটিলা, নিরাপদে যাত্রা করো। ঈশ্বরের বাতাস তোমাদের সঙ্গী হোক।’
সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে এ পর্যন্ত দুই শতাধিক কর্মী-সামাজিক আন্দোলনকারীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল। গাজার অবরোধ ভেঙে মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে যাওয়া এই বহরে ৪০টিরও বেশি জাহাজ ছিল। এর আগে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী ফ্লোটিলার জাহাজগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়, জলকামান ছুড়ে আক্রমণ চালায় এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় সক্রিয় কর্মীদের আটক করে। ইসরায়েল এ পর্যন্ত ফ্লোটিলার ১৩টি জাহাজ আটক করেছে বলে দাবি করেছে।
তবে কর্মী-সংগঠনটি বলছে, এই বাধা তাদের মিশন থামাতে পারবে না। ইসরায়েলকে ফাঁকি দিয়ে গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুমুদ ফ্লোটিলার অন্তত ৩০ জাহাজ। গাজা উপকূল থেকে আর মাত্র ৮৫ কিমি দূরে রয়েছে তারা। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ভাষ্য, অবৈধভাবে চালানো ইসরায়েলি বাধা সত্ত্বেও তারা গাজার অবরোধ ভাঙতে এবং একটি মানবিক করিডর খুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাদের দাবি, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় অনাহারে থাকা ফিলিস্তিনিদের জন্য এই নৌবহর খাদ্য ও মানবিক সহায়তা বহন করছে।
সুমুদ ফ্লোটিলার মুখপাত্র সাইফ আবুকেশেক ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় জানিয়েছেন, গাজামুখী সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে ৩৭ দেশের দুই শতাধিক কর্মীকে বন্দি করেছে ইসরায়েল। তিনি বলেন, আটক হওয়া নৌযানগুলোতে ৩৭ দেশের ২০১ জন কর্মী ছিলেন। এর মধ্যে স্পেন থেকে ৩০ জন, ইতালি থেকে ২২ জন, তুরস্ক থেকে ২১ জন এবং মালয়েশিয়া থেকে ১২ জন অংশ নেন।
বাংলাদেশের শহিদুল আলম ছাড়াও সুমুদ ফ্লোটিলায় রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক রুহি আক্তার রুহিও।
ইসরায়েল বলছে, গাজাগামী এই নৌযানগুলো ‘আইনসম্মত নৌ অবরোধ ভাঙার চেষ্টা করছে।’ তবে আন্তর্জাতিক আইনে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর অধিকার রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। নিরাপত্তার জন্য ফ্লোটিলার পক্ষ থেকে যাত্রাপথ সরাসরি ভিডিও সম্প্রচারও করা হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন