কোরবানি আর্থিক ইবাদত। আল্লাহ তাআলা রাজি-সন্তুষ্টি করার জন্য ও ইবরাহিম (আ.)-এর সুন্নত পালনের জন্য কোরবানি করা হয়।
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোরবানির দিন আদম সন্তান যে আমল করে তার মধ্যে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় আমল হলো কোরবানির পশুর রক্ত প্রবাহিত করা। কোরবানির পশু কিয়ামতের দিন তার শিং, নাড়িভুঁড়ি ও চুল-পশম নিয়ে উপস্থিত হবে। আর তার রক্ত জমিনে পতিত হওয়ার আগেই আল্লাহর নিকট কবুল হয়ে যায়। অতএব তোমরা আনন্দের সাথে তা পালন করো।’ (ইবন মাজাহ)
কোরবানির পশু নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- কোরবানির জন্য পশুর স্বাস্থ্যগত ও গুণগত বিষয়টি। সব জায়েজ পশু দিয়ে কোরবানি দেওয়া যায় না। কোরবানির জন্য শরিয়ত পশু নির্ধারণ করে দিয়েছে। মোট ছয় প্রকার জন্তু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ। সেগুলো হলো-উট, গরু, মহিষ, দুম্বা, ভেড়া ও ছাগল। এগুলো ছাড়া অন্য পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ নেই।
কোরবানি করার জন্য ছাগল, ভেড়া ও দুম্বার বয়স কমপক্ষে এক বছর পূর্ণ হতে হবে। অবশ্য ছয় মাসের ভেড়া যদি দেখতে মোটাতাজা হয় এবং এক বছর বয়সের মতো মনে হয়, তা হলে তা দিয়েও কোরবানি করা বৈধ। গরু-মহিষের হতে হবে পূর্ণ দুই বছর। আর উটের পাঁচ বছর পূর্ণ হতে হবে। (হেদায়া : ৪/১০৩)
এ ছাড়াও কোরবানির পশু হবে ত্রুটিমুক্ত, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, মধ্যবয়সী ও দৃষ্টিনন্দন।
পবিত্র কোরআনে যেমনটি ইরশাদ হয়েছে, ‘মুসা বলল, আল্লাহ বলছেন, তা এমন গরু যা বৃদ্ধও নয়, অল্পবয়স্কও নয়-মধ্যবয়সী। সুতরাং তোমরা যা আদিষ্ট হয়েছ তা বাস্তবায়ন করো। ...আল্লাহ বলছেন তা হলুদ বর্ণের গরু, তার রং উজ্জ্বল গাঢ়-যা দর্শকদের আনন্দ দেয়।
...মুসা বলল, তিনি বলছেন, তা এমন এক গরু যা জমি চাষে ও ক্ষেতে পানি সেচের জন্য ব্যবহৃত হয়নি- সুস্থ নিখুঁত। ’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ৬৮-৭১)
উল্লিখিত আয়াতের আলোকে ইসলামী আইনজ্ঞরা বলেন, কোরবানির পশু নিখুঁত, দৃষ্টিনন্দন, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও মধ্যবয়সী হওয়া উত্তম। দৃষ্টিনন্দন যেকোনো রঙের পশু যেমন কোরবানি করা যাবে, তেমনি চাষাবাদে ব্যবহৃত হওয়ার পরও যদি সেই পশু ত্রুটিমুক্ত থাকে তবে তা কোরবানি করা যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :