সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট নিরসনে বড় পরিসরে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকসহ নতুন সৃষ্ট পদ মিলিয়ে মোট শূন্য পদ রয়েছে ৭৩ হাজারেরও বেশি। এসব শূন্য পদ দ্রুত পূরণের নির্দেশনা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদের মোট সংখ্যা ৪ লাখ ২২ হাজার ১১০। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক পদের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৪৫৭, যেখানে শূন্য রয়েছে ৩৪ হাজার ১০৬টি। সহকারী শিক্ষক পদের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৩, এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ২৪ হাজার ৫৩৬টি।
এ ছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষক, সংগীত, চারুকলা ও শারীরিক শিক্ষার জন্য প্রায় ১৫ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯ হাজার ৫৭২টি সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ ইতিমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছে, যেগুলো পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হতে পারে। বাকি পদের বিষয়ে কাজ চলছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মাসুদ আকতার খান জানান, দেশের সব শূন্য পদের তালিকা প্রস্তুত রয়েছে। প্রাথমিকে প্রচলিত ৬০ শতাংশ নারী কোটার সঙ্গে উচ্চ আদালতের দেওয়া ৯ শতাংশ মেধাভিত্তিক নিয়োগ রায় যুক্ত হবে কি না, তা জনপ্রশাসন ও পিএসসির মতামতের ওপর নির্ভর করছে। মতামত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এদিকে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় দুই কোটির বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এর মধ্যে এক কোটির বেশি ছাত্রছাত্রী পড়ে সরকারি বিদ্যালয়ে। কিন্তু শিক্ষক সংকটে শিক্ষার মান ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষার মান ধরে রাখতে হলে শূন্য পদ দ্রুত পূরণ করতে হবে। আমাদের উচিত, পদ খালি হওয়ার অন্তত ছয় মাস আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা।’
সরকার চাচ্ছে, নতুন সৃষ্ট সব পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি একসঙ্গে প্রকাশ করতে। সময়মতো নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হলে শিক্ষক সংকট অনেকটাই কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :