ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫

কীভাবে ফরজ গোসল করবেন, জানুন

ধর্ম ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২৫, ০৬:০১ এএম
কীভাবে ফরজ গোসল করবেন, জানুন। ছবি- সংগৃহীত

ইসলামে গোসল একটি গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক ও আধ্যাত্মিক পবিত্রতা অর্জনের উপায়। সাধারণভাবে গোসল করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো বাধ্যবাধকতা না থাকলেও, নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে গোসল ফরজ হয়ে যায় এবং তখন তা নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী করাই বাধ্যতামূলক।

প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান নারী-পুরুষের জন্য কখন ফরজ গোসল করতে হয়?

  • যৌন সম্পর্কের পর
  • বীর্যপাতের পর
  • হায়েজ (মাসিক) বা নেফাস (সন্তান জন্মের পর রক্তস্রাব) শেষ হলে
  • সন্তান প্রসবের পর
  • কারও মৃত্যুর পর (জানাজার পূর্বে গোসল করানো)

কখন গোসল মুস্তাহাব?

ইসলামে কিছু পরিস্থিতিতে গোসল করাকে মুস্তাহাব (অর্থাৎ করা উত্তম) বলা হয়েছে, যেমন-

  • জুমার নামাজের পূর্বে
  • ঈদের নামাজের আগে
  • ইহরাম বাঁধার আগে (হজ বা ওমরাহর সময়)
  • অজ্ঞানতা কাটার পর
  • কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে

কোন পানি দিয়ে গোসল জায়েজ?

গোসলের জন্য পবিত্র ও পরিষ্কার পানিই ব্যবহারযোগ্য। যেমন:

  • বৃষ্টির পানি
  • নদী, সাগর বা ঝর্ণার পানি
  • বড় পুকুর বা ট্যাঙ্কির পানি
  • বরফ গলে পাওয়া পানি
  • কুয়োর পানি

কিন্তু নিচের ধরনের পানি দিয়ে গোসল জায়েজ নয়:

  • যেসব পানিতে নাপাক বা অপবিত্র কিছু মিশে গেছে (যেমন: মল, রক্ত, মদ, মূত্র ইত্যাদি)
  • ফল বা গাছ থেকে নিঃসৃত পানি
  • যেসব পানির রঙ, গন্ধ, স্বাদ পরিবর্তিত হয়েছে
  • হারাম বা হিংস্র প্রাণীর পান করা অবশিষ্ট পানি

ফরজ গোসলের মূল তিনটি কাজ

  • কুলি করা (গড়গড়া করা)
  • নাকে পানি পৌঁছানো
  • সম্পূর্ণ শরীরে পানি পৌঁছানো অর্থাৎ এক পশম পরিমাণ অংশও শুকনো থাকা যাবে না

ফরজ গোসলের ধাপে ধাপে নিয়ম

  • নিয়ত করা (উদ্দেশ্য নির্ধারণ): যেমন, ‘আমি নাপাকি থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য গোসল করছি’
  • বিসমিল্লাহ পড়ে দুই হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া
  • শরীরের নাপাক অংশ পরিষ্কার করা
  • অজু করা (রোজাদার না হলে কুলি ও নাকে পানি দেওয়া)
  • মাথায় পানি ঢেলে চুলের গোড়া পর্যন্ত ভিজানো
  • প্রথমে ডান কাঁধে, পরে বাম কাঁধে পানি ঢেলে পুরো শরীর ধোয়া
  • শেষে পা ধোয়া এবং শুকনো কাপড় পরা

শেষ কথা

গোসল শুধু পরিচ্ছন্নতার জন্য নয়, বরং একজন মুসলমানের আধ্যাত্মিক বিশুদ্ধতার চর্চাও বটে। শরীর ও আত্মার পবিত্রতা ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য। তাই শুদ্ধভাবে গোসল করে নামাজ, হজ, রোজা ইত্যাদি ইবাদত যথাযথভাবে আদায় করাই একমাত্র কাম্য।